দাম কমেছে বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের

প্রকাশিত: ১২:৫৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২০
ফাইল ছবি

ধলাই ডেস্ক: মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে ঈদের আগে বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। তবে ঈদের পর চাহিদা কমায় গত এক মাসে চাল, ডাল, তেল, চিনি, আদা, পেঁয়াজ, রসুনসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম কমেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ানবাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যামবাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভীবাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মীরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে টিসিবির তৈরি করা মাসভিত্তিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

চাল: টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে নাজির ও মিনিকেট চালের দাম ৪ দশমিক ২০ শতাংশ কমে ৫২ থেকে ৬২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। চিকন চালের দাম কমলেও মাসের ব্যবধানে বেড়েছে মোটা চালের দাম। মোটা চালের দাম ১ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম মাসের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

আটা-ময়দা: গত এক মাসে প্যাকেট আটার দাম ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটার দাম কমেছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। বর্তমানে প্রতিকেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ থেকে ৩০ টাকা। খোলা আটার পাশাপাশি দাম কমেছে খোলা ময়দার। মাসের ব্যবধানে খোলা ময়দার দাম ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে কেজি ৩৪ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে প্যাকেট করা ময়দা আগের মতোই ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্য তেল: ভোজ্য তেলের মধ্যে মাসের ব্যবধানে সব থেকে বেশি দাম কমেছে সুপার পাম অয়েলের। সুপার পাম অয়েলের দাম ৬ দশমিক ৪৫ শতংশ কমে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। তবে লুজ (খোলা) পাম অয়েলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের মতোই লুজ পাম অয়েলের লিটার ৬৫ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

লুজ (খোলা) সয়াবিন তেলের দাম মাসের ব্যবধানে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ কমে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা হয়েছে। আর বোতলের ৫ লিটারের সয়াবিন তেল ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে ৪৫০ থেকে ৫১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

ডাল: গত এক মাসে সব ধরনের মসুর ডাল ও অ্যাংকর ডালের দাম কমেছে। তবে বেড়েছে মুগ ডাল ও ছোলার দাম। বড় দানার মসুর ডালের দাম ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। মাঝারি দানার মসুর ডাল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ কমে ৯০ থেকে ১০০ টাকা এবং ছোট দানার মসুর ডাল ৮ শতাংশ কমে কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। অ্যাংকরের দাম ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ কমে ৩৬ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে মুগ ডালের দাম ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ বেড়ে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ছোলার দাম ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। তবে মাসের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে আলুর দাম। আলুর কেজি আগের মতোই ২৮ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

চিনি-ডিম: করোনাভাইরাসের প্রকোপ ও রোজায় কয়েক দফা বাড়লেও ঈদের পর একাধিক দফায় কমেছে চিনির দাম। এতে মাসের ব্যবধানে ২ দশমিক ৪০ শতাংশ কমে চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬৫ টাকায়। অপরদিকে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি হালি ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

মসলা: গত এক মাসে প্রায় সব ধরনের মসলাজাতীয় পণ্যের দাম কমেছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি কমেছে আদা ও জিরার। বড় অঙ্কের দাম কমেছে পেঁয়াজেরও। দেশি পেঁয়াজের দাম মাসের ব্যবধানে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা হয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে।

দেশি আদার দাম ৩৬ দশমিক ১১ শতাংশ কমে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা এবং আমদানি করা আদা ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। জিরার দাম ৩৪ শতাংশ কমে কেজি ৩১০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে।

আমদানি করা রসুনের দাম ২৮ শতাংশ কমে কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা হয়েছে। তবে দেশি রসুনের দাম ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়ে ৯০ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশি শুকনা মরিচের দাম কমেছে ১০ দশমিক ৯১ শতাংশ। বর্তমানে প্রতিকেজি দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৮০ টাকা। আমদানি করা শুকনা মরিচ ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ কমে ২৬০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

দারুচিনির দাম ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ কমে কেজি ৩৮০ থেকে ৪৮০ টাকা হয়েছে। এলাচের ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ দাম কমে কেজি ২৯০০ থেকে ৩৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ধনের দাম ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ কমে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তেজপাতার ৮ শতাংশ দাম কমে কেজি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা হয়েছে।

মাছ ও মাংস: রুই মাছের দাম মাসের ব্যবধানে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে ইলিশ মাছ আগের মতোই ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে ৫৭০ থেকে ৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

গরু ও খাসির মাংসের দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে মুরগির দাম। গত এক মাসে বয়লার মুরগির দাম ১৪ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি মুরগির দাম ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়ে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।