প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় কমলগঞ্জে কলেজ ছাত্রীকে মাটিতে ফেলে বুকে উঠে লাঞ্চিত করেছে বখাটে
কমলগঞ্জ সংবাদদাতা: কলেজে যাতায়াতকালে প্রায়ই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পতনউষার স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বিউটি আক্তার (১৮) কে উত্যক্ত করতো শ্রীসুর্য টিলাগড় গ্রামের বখাটে সাইফুল খান (১৮)। শনিবার (৩১ আগস্ট) বেলা আড়াইটায় কলেজ থেকে দুই সহপাঠী ছাত্রীসহ বাড়ি ফেরার পথে পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসুর্য টিলাগড় গ্রামের পুরাতন মসজিদের সামনে পথরোধ করে ছাত্রীটিতে হাতে ধরে টেনে মাটিতে ফেলে দেয় বখাটে। বখাটে সাইফুল একই গ্রামের মিলন খানের ছেলে।
জানা যায়, মাটিতে ফেলে বখাটে সাইফুল ছাত্রীর বুকের উপর উঠে হাতে চাকু রেখে ভয় দেখায়। সাথে সাথে তার সাথে প্রেম না করলে প্রাণে মারারও হুমকি দেয়। এক সময় বখাটে ছাত্রীর স্বর্ণের একটি নাক ফুল, দুটি কানের দুল ও হাত ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়। ছাত্রীর সহপাঠী দুই মেয়ে ভয়ে একটু দূরে সরে গেলে মাটিতে পড়া অবস্থায় ছাত্রী বিউটি চিৎকার শুরু করে। এসময় লোকজন আসছে ভেবে বখাটে পালিয়ে যায়। দুই সহপাঠীর সহায়তায় লাঞ্চিত হওয়া ছাত্রী নিজ বাড়িতে এসে বাবা মার কাছে ঘটনাটি জানায়।
শনিবার বিকালে ঘটনাটি শুনে সাড়ে ৫টায় শ্রীসুর্য গড়ের টিলা গ্রামে লাঞ্চিত হওয়া ছাত্রীর বাড়ি গেলে দেখা যায় সেখানে পতনউষার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী তওফিক আহমদ, পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফয়েজ আহমদসহ গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত রয়েছেন। এসময় শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনজির আহমদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল লাঞ্চিত ছাত্রীর বক্তব্য গ্রহন করেন।
লাঞ্চিত কলেজ ছাত্রী বিউটি আক্তার জানায়, প্রতিদিন সে কলেজে যাবার ও আসার সময় বখাটে সাইফুল উত্যক্ত করে প্রেম নিবেদন করতো। তাতে সাড়া না দেওয়ায় শনিবার কলেজ থেকে ফেরার পথে বেলা আড়াইটায় গ্রামের পুরাতন মসজিদের সামনে পথরোধ করে হাতে ধরে টেনে মাটিতে ফেলে দেয় বখাটে। এক সময় বখাটে বুকের উপর উঠে হাতে একটি চাকু রেখে ভীতি প্রদর্শণ করে তার মুঠোফোন নম্বর চায়। সাতে সাথে স্বর্ণের নাক ফুল, কানের দুটি দুল ও একটি হাতঘড়ি ছিনিয়ে নেয়। সে আরও জানায় শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করায় মাথায়, হাতে ও পায়ে সে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে।
ছাত্রীর মা ছয়ফুল বেগম বলেন, এ ঘটনায় পুরো পরিবার এখন আতঙ্কিত আছেন। এখন আগে মেয়ের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হবে।
পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী তওফিক আহমদ ও অধ্যক্ষ ফয়েজ আহমদ বলেন, এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে ছাত্রীর পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে। তারা আরও বলেন, অভিযুক্ত বখাটের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া না হলে বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ক্ষতি হবে।
বখাটে সাইফুলের বাবা মিলন খান ছেলেটি বখাটে স্বীকার করে বলেন, সে এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। গত ঈদের দিনেও সাইফুল তার মাকে মারধর করেছে। তিনি আরও বলেন, তিনিও চান পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাক।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনজির আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুধু ছেলে নয় তার বাবাও খারাপ প্রকৃতির। বখাটেকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ দিলে নিয়মিত মামলা হবে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।