ফলোআপঃ কমলগঞ্জে ফ্যানের আঘাতে সঞ্জিতের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি
স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা কারখানায় কাজের সময় অসাবধনতাবশত বৈদ্যুতিক ফ্যানে মাথা লেগে গুরুতরভাবে আহত হয়ে এক চা-শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত চা শ্রমিক কুৃরমা চা বাগানের ফাঁড়ি বাঘাছড়া চা বাগানের মৃত সুদান প্রসাদ গড়ের ছেলে সঞ্জিত গড় (৩৫)।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকালে চা-বাগান কারখানায় দূর্ঘটনা ঘটে। ঘটনায় কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলে ফাঁড়ি বাগান বাঘাছড়ার চা শ্রমিকরা বুধবার সকাল থেকে কাজে যোগ না দিয়ে কর্মবিরতি পালন করে। মঙ্গলবার বিকেলে কারখানায় চা তৈরীর কাজ করছিল সনজিত গৌড়। কাজের ফাঁকে অসাবধানতাবশত কারখানার ভেতর থেকে গরম হাওয়া বের করার সাতেল ফ্যানের সাথে মাথা লাগলে সে মারাত্মকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়। এসময় তার সাথে কাজ করা অন্য শ্রমিকরা দ্রæত তাকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জয়দীপ পাল সঞ্জিত মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব এর অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে কাজে যোগ না দিয়ে বাঘাছড়া চা বাগানের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে। বাঘাছড়া বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি রাখাল গোয়ালা বলেন, আসলে কাজের জায়গায় যেভাবে নিরাপত্তার দরকার চা কারখানায় সেভাবে নিরাপত্তা নেই। তাই মঙ্গলবারের দুর্ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বাঘাছড়া চা বাগানের শ্রমিকরা প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করে। কর্মবিরতির খবর পেয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ও কুরমা চা বাগানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক আক্তার শহীদ আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন। আলোচনাকালে ইউপি চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপক নিহতের পরিবারের সার্বিক সহায়তা ও কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিলে চা শ্রমিকরা দুপুর দেড় টায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও কাজে যোগ দেয়নি। আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা আজকের কর্মবিরতিকে শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এবং আজকের কাজ আগামী রোববার ছুটির দিনে করে দেবে বলে জানায়।
কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান বলেন, কারখানায় দূর্ঘটনায় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবারের আন্দোলনের সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি জানান,ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে আলোচনায় সমস্যার আপাতত সমাধান হয়েছে। নিহত চা শ্রমিকের মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে বুধবার বিকেলে লাশ বাঘাছড়া চা বাগানে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।