স্টাফ রিপোর্ট: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পর্যটন সমৃদ্ধ করেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, হামহাম জল প্রপাত, আদিবাসী খাসিয়া পুঞ্জি, মণিপুরী পল্লীসহ বিভি চা বাগান। দেশী বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম স্নাই হচ্ছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবপুর লেক। দিনে দিনে মাধবপুর লেক সহ অন্য অন্য আকষর্ণী এলাকায় পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে।
তবে পর্যটকদের সেবা দানে মাধবপুর লেকের উন্নয়নে পর্যটন কর্পোরেশ সাড়ে ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্ধ দিলেও ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসি)-ও আপত্তির কারণে এ টাকা ফেরৎ যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মাধবপুর লেকে আসা পর্যটক বহনকারীদের যানবাহন প্রবেশকালে এনটিসির মালিকানাধীণ মাধবপুর চা বাগান কর্তৃপক্ষ একটি টোকেনের মাধ্যমে টাকা আদায় করেন।
তবে চা বাগানের চার দিকের উঁচু টিলার মধ্যবর্তী প্রায় ১ বর্গ কিলোমিটার আঁকাবাঁকা অপরুপ সুন্দর মাধবপুর লেকে পর্যটকদের সেবা দানে তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। লেক এলাকায় একটি ছোট ছাউনী ও একটি ছোট টয়লেট ছাড়া আর কোন ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া সঠিকভাবে লেকটি পরিচর্চা ও আগত পর্যটকদের তদারকেরও কোন ব্যবস্থা নেই। পর্যটকদের আরো আকৃষ্ট করে তাদের সেবা ও নিরাপত্তাদানে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আবেদনে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন মাধবপুর লেক উন্নয়নে সাড়ে ৪৬ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহন করে। গৃহীত প্রকল্পটি কাজ শুরুর উদ্যোগ নিয়ে মাধবপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক এনটিসির বোর্ডের অনুমতি সিদ্ধান্ত ছাড়া এ কাজটি করা যাবে না।
এ অবস্থায় কমলগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হককে জানান এনটিসি কর্তৃপক্ষ তাদের বোর্ড মাধবপুর লেক উন্নয়নে অনুমতি দেয়নি। তাই লেক উন্নয়নে পর্যটন কর্পোরেশন কোন কাজ করতে পারবে না। মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু জানান, এনটিসিও সরকারি প্রতিষ্ঠান আর পর্যটন কর্পোরেশনও সরকারি প্রতিষ্ঠান। আর সরকারি জমি বন্দোবস্ত নিয়ে চা বাগান করা হয়েছে। এখানে মাধবপুর লেকের পর্যটন উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহন করা হলেও কিভাবে এনটিসি আপত্তি জানায় ? তিনি মনে করেন জেলা প্রশাসক চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে মাধবপুর লেকের উন্নয়নের কাজ করতে পারেন।
মাধবপুর চা বাগানের ব্যব¯’াপক মোরাদ চৌধুরী বলেন, তিনি ছুটিতে আছেন। এ সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। পরবর্তীতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনটিসির জনৈক জিএম বলেন, এলাকাটি চা বাগানভুক্ত বলে এনটিসির বোর্ডের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই স্থানীয়ভাবে মাধবপুর লেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে তাদের আপত্তি রয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক এনটিসির আপত্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ আপত্তি প্রত্যাহার না করলে পর্যটন কর্পোরেশনের বরাদ্ধকৃত সাড়ে ৪৬ লাখ টাকা ফিরে যাবে। লেকটিকে জেলা প্রশাসনভুক্ত করতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে নতুন করে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। জমিটুকু সরকারের আর এনটিসি বন্দোবস্ত নিয়ে চা প্লান্টেশন করেছে মাত্র। তিনি মনে করেন এক সময় এনটিসি তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, চা বাগান কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের যানবাহন থেকে টোকেনের মাধ্যমে যে আয় করছে তার বৈধতা নিয়েও খতিয়ে দেখা হবে।