স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চলতি মৌসুমে দেশী আলুর ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজার মূল্য কম হওয়ায় চাষিরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। পাইকারি বাজারে ললিত আলুর পাশাপাশি দেশী জাতের আলুর দাম পাচ্ছেননা চাষীরা। আলুর দাম কম থাকায় খুচরা বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা স্বস্তি প্রকাশ করলেও চাষিরা বাধ্য হয়ে কম দামেই আলু বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫২৫ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আলুর ফলনও ভালো হয়েছে। তবে শেষ সময়ে বাজারে আলুর মূল্য কমে যাওয়ায় কৃষকেরা আলু নিয়ে হতাশায় ভুগছেন।
আলু চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে হঠাৎ করে আলুর দাম কমে যাওয়ায় বাজারের পাইকারেরা দেশী জাতের আলুর দামও কমিয়ে দিয়েছে। ভরা মৌসুমে আমরা বাজারে আলুর দাম পাচ্ছিনা। খুচরা বাজারে দেশী জাতের আলুর কেজি
৩০ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে, আর সেই আলু আমারা বিক্রি করছি ১৫ থেকে ২০ টাকা দামে। উপজেলার ভানুগাছ বাজার আদমপুর শমশেরনগর, মুন্সিবাজার, ঘুরে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে খোলাবাজারে দেশী জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাল আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২৫ টাকায়। আর চাষিরা মাঠ থেকে সেই দেশী জাতের আলু মণ প্রতি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, লাল আলু বিক্রি করছেন ৪৫০ থেকে ৫০০ । আর সাদা ললিত প্রতি মণ আলু বিক্রি করছেন ২৫০ টাকায়। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আব্দুুল মজিদ জানান, বাজারে আলুর দামের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। যে টাকা দিয়ে আলু উত্তোলন করা হচ্ছে সেই দামও বাজারে মিলছেনা। এবার আলু চাষ করে সংকটে পড়েছি। উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কৃষক মঈনু মিয়া জানান, তিনি দেড় একর জমিতে দেশী ও ললিত আলু চাষ করছেন। আলু বড় হওয়ার সময় পোকার আক্রমণে কিছু গাছ মরে যায়। এখন আলু বিক্রি করার সময় কিন্তু বাজারে দাম নেই। যে টাকা খরচ করেছি এই টাকা আলু বিক্রি করে তুলতে পারিনি। তিনি আরও জানান, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করছেন।এখন কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন সে চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান জানান, উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এবার আলু চাষ ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকলে থাকায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে। বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় কৃষকেরা কিছুটা হতাশ। এখনও মাঠে পড়ে রয়েছে আলু, কতটুকু লক্ষমাত্র পূরণ হয়েছে কয়েকদিনের মধ্যে তা জানা যাবে বলে তিনি জানান।