ভারতে ফণীর তাণ্ডব মোকাবেলায় নৌবাহিনী মোতায়েন

প্রকাশিত: ১০:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩০, ২০১৯

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও শক্তিশালী হয়ে হারিকেনের তীব্রতাসম্পন্ন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ভারতের ওড়িশা উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে থাকা এ ঘূর্ণিঝড় আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরও শক্তিশালী হয়ে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও।

ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দেশটির পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা রাজ্যে যেকোনো সময় এই ঝড় আঘাত হানতে পারে। প্রবল এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন উপকূলবর্তী রাজ্যগুলোতে ইতোমধ্যে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে ভারত। একই সঙ্গে ঝড়ের তাণ্ডব পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশটির নৌ-বাহিনীকে উদ্ধারকারী জাহাজ-সহ মোতায়েন করা হয়েছে।

দেশটির বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় তামিলনাড়ুর বিশাখাপত্তম ও চেন্নাইয়ে নৌবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোতে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ফণীর প্রতি মুহূর্তের গতিবিধির উপর নজর রেখে রাজ্য প্রশাসনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম কক্সবাজার, মোংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরের ১২শ থেকে ১৩শ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল ফণী।

ভারতের আবহাওয়া দফতর বলছে, চেন্নাই থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। শুক্রবার ১৯৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়তে প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়।

দেশটির আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, ফণী ক্যাটাগরি দুই মাপের ঘূর্ণিঝড়। এই ক্যাটাগরিতে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার। সোমবার সন্ধ্যায় শক্তি বাড়িয়ে ‘সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্মে’ পরিণত হয়েছে ফণী।

আবহাওয়া দফতর বলছে, যত উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ততই শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড়টি। বুধবার ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্মে’ পরিণত হয়ে আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ ক্যাটাগরি ৪ মাপের ঘূর্ণিঝড়। যার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৬ থেকে ২২০ কিলোমিটার।

এরপর শুক্র অথবা শনিবার ওড়িশা ছুঁয়ে ফণী উঠে আসতে পারে কলকাতা উপকূলে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ আরও বদলালে উপকূল অতিক্রমের জায়গাও বদলে যেতে পারে। তাতে করে প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশেও।