লাউয়াছড়ায় রাতে আঁধারে পাচার হচ্ছে বৃক্ষ!

প্রকাশিত: ৮:৩০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২০
ছবি ধলাইর ডাক

স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া পাহাড়ি টিলা ভেতর থেকে রাতের আঁধারে কেটে নেয়া হচ্ছে মূল্যবান বৃক্ষ। বনের টিলায় মুখ থুবরে পড়ে আছে এসব বৃক্ষের গোড়া। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য। লাউয়াছড়া বনের দু’টি টিলা ঘুরে এচিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, লাউয়াছড়া উদ্যানের বাঘমারা ক্যাম্পের সম্মুখে ও মুজিবের উঠনি টিলায় গত কয়েকদিনে কেটে নেয়া হয়েছে চার চারটি মূল্যবান বৃক্ষ । বাঘমারা ক্যাম্পের সম্মুখের টিলায় দু’টি চিকরাশি ও একটি মেহগনি এবং মুজিবের উঠনি টিলায় কেটে নেয়া একটি চিকরাশির বৃক্ষের গোড়া পড়ে থাকতে দেখা যায়। কয়েকদিন পূর্বে এসব বৃক্ষ কেটে নেয়া হয়। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘ দিন ধরে গভীর রাতে বনের ভেতর থেকে বড় বড় এসব বৃক্ষ কেটে পাচার করছে। কেটে নেয়া এসব বৃক্ষের খন্ডাংশ পিকআপ ও ঠেলাগাড়ি যোগে পাচার করা হয় চোরচক্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন লোক জানান, দু’একদিন পর পরই গভীর রাতে এভাবে লাউয়াছড়া বনের বিভিন্ন টিলা থেকে বৃক্ষ কেটে নেয়া হয়। একটি প্রভাবশালী মহল সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে বৃক্ষ কেটে নেয়। ফলে এই উদ্যানটিতে পুরনো প্রাকৃতিক গাছগুলো ক্রমাম্বয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বন ফাঁকা হওয়ায় হুমকির মুখে পড়ছে জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য।
লাউয়াছড়া উদ্যানটি বিরল প্রজাতির প্রাণির সংমিশ্রণে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব বহন করলেও এ বনের বৃক্ষ উজাড় হওয়ার কারণে অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে বন। বনের অবক্ষয়, খাবার ও বাসস্থান সংকটে অতিষ্ঠ প্রাণিকূল। পূর্বের মতো দিনের বেলা এখন আর বনে অন্ধকার দেখা যায় না। এতে একদিকে প্রাণির আবাসস্থল বিলুপ্ত হচ্ছে অন্যদিকে খাবার সংকটে পড়ছে বন্যপ্রাণি। তবে গাছ পাচার বিষয়ে বাঘমারা বনক্যাম্পের প্রহরী মো. মোতাহের বলেন, আসলে বৃক্ষটি ঝড়ে পড়তে পারে। তাছাড়া কয়েকবছর পূর্বেও যেহারে বৃক্ষ চুরি হতো এখন মোটেও বৃক্ষ চুরি হচ্ছে না। বৃক্ষ চুরি রোধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।
লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন জানান, এখানে একটি বৃক্ষ ঝড়ের কারণে পড়ে যায়। তাছাড়া আর কোন বৃক্ষ চুরি হওয়ার কথা নয়।
এব্যপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বৃক্ষ চুরি হওয়ার মতো কোন সংবাদ পাননি। তবে এই দুই টিলা থেকে চারটি বৃক্ষ কেটে নেয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে লাউয়াছড়া বনের গাছগাছালি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এসব বিষয়ে সকলের সহযোগিতা দাবি করেন।