করোনার লকডাউনে কমলগঞ্জে কর্মহীন ৫ শতাধিক শব্দকর পরিবার ! ত্রাণ নেই দূর্র্বিষহ জীবন যাপন

প্রকাশিত: ৬:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০২০
ছবি ধলাইর ডাক

স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টি শব্দকর সম্প্রদায়। এ সম্প্রদায়ের ৮০ ভাগ লোক হতদরিদ্র ও দিন মজুর। করোনা ভাইরাসে এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫শতাধিক পরিবার কর্মহীন অবস্থায় দূর্বিষহ জীবন যাপন কাটাচ্ছেন। নেই কোন কাজ নেই কোন খাবার। বেকার হয়ে গৃহে অবস্থান করেছেন হতদরিদ্র এ শব্দকররা। কিন্তু সরকারী ভাবে গুটিকয়েক পরিবার বাদে অধিকাংশ পরিবারের জুটেনি সরকারী বা বেসরকারী খাদ্য সহায়তা। দ্রুত পরিবারগুলোকে সহযোগীতার হাত বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা।

জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টি শব্দকর সম্প্রদায়ের । উপজেলার সুরান্দপুর. সরিষকান্দি, মইডাইল, তিলকপুর, রামচন্দ্রপুর, ধাতাইলগাঁও,লক্ষীপুর, নছরতপুর, জালালিয়া, নাগড়া, বালীটেকি,শ্রীনাথপুর, ছলিমবাজার পতনউষারসহ প্রায় ৩৭টি গ্রামে দেড় হাজার পরিবার বসবাস করছেন। এদের মধ্যে বেশিই ভাগই দিনমজুর ও ভুমিহীন। তাদের রিক্সাচালক, কেউ ভিক্ষুক, কেউ ঠেলাচালক, কেউ বাদ্য বাজান, কেউ দোকান কর্মচারী। দেড় হাজার পরিবারে মধ্যে প্রায় ৫শত পরিবার খুবই দরিদ্র । করোনা ভাইরাস দেশে সংক্রিত হবার আশংকার দেশে লকডাউন হওয়ায় গত ১ সপ্তাহ ধরে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। কেউ রোজগারে নেই। সবাই বাড়িতে না খেয়ে বসে দিন কাটাচ্ছে। এই হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে দেখার মতো কেউ নেই। ভ্যান-ঠেলা- রিকশা চালিয়ে ও ভিক্ষাবৃত্তি করে চলা জীবন এখন বন্ধি ঘরে আবদ্ধ। অনাহারে দিন কাটছে পরিবারগুলো। অনেক পরিবার ছেলে মেয়ে নিয়ে লবণ চা আ মুড়ি ভাজা খেয়ে দিন পার করছে। মুন্সিবাজার, রহিমপুর ইউনিয়নে কয়েক পরিবার খাদ্য সহায়তা পেলেও বাকী পরিবারগুলো এখনো কোন ধরনে ত্রান পায়নি। পতনউষার ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের রিক্স্রচালক হরেন্দ্র শব্দকর বলেন, ৪ সদস্য পরিবার নিয়ে আজ অনেক কষ্টে রয়েছি। কোন ধরেন সরকারী সহযোগীতা পাইনি। রিক্স চালিয়ে আমার সংসার চলতো। খুবই কষ্টে জীবন চলছে। একই ভাবে আলীনগর ইউনিয়নের শ্রীনাথপুর গ্রামের চা ষ্টলের কর্মচারী সজল শব্দকর বলেন, মালিক দোকান বন্ধ করায় বেকার বাড়িতে দিন কাটছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তারা অভিযোগ করেন এখনো পর্যন্ত কোন জনপ্রতিনিধি তাদের খোঁজ নিতে বাড়িতে যাননি। এভাবে প্রতিটি শব্দকর পাড়ায় দিন কাটছে অভাবী মানুষদের।

কমলগঞ্জ উপজেলা শব্দকর উন্নয়ন পরিষদের উপদেষ্টা আহমদ সিরাজ, পিছিয়ে পড়া এ জনগোষ্টি সবচেয়ে হতদ্ররিদ। দিন আনে দিন খায়। এ মুর্হুতে এসব শব্দকর পরিবারগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ সহায়তাও আওতায় আনার দাবী জানান।

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার আশেকুল হক বলেন, সরকারী নির্দেশ অনুয়ায়ী হতদরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা করতে হবে। সরকারী ত্রান তালিকায় এসব জনগোষ্টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে অর্ন্তভুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে। যদি কোন ত্রান না পেয়ে থাকেন তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।