
ধর্ম ডেস্ক: এল হিজরি নববর্ষ ১৪৪৪ সন। ইসলামের বিভিন্ন বিধিবিধান হিজরি সন আরবি তারিখ ও চান্দ্রমাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠান, আনন্দ-উৎসবসহ সব ক্ষেত্রেই মুসলিম উম্মাহ হিজরি সনের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও মুসলিম জীবনে হিজরি সনের গুরুত্ব অপরিসীম।
মহররম হিজরি বর্ষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাস। পবিত্র কোরআনুল কারিম ও হাদিস শরিফে এ মাসকে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ বলা হয়েছে। কোরআনের ভাষায় এটি সম্মানিত চার মাসের (‘আরবাআতুন হুরুম’) অন্যতম। এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা ও তওবা ইস্তিগফারের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ ( সা.) মহররম মাসকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা আল্লাহর মাস বলছেন। জানা কথা, সব মাসই আল্লাহর মাস। এরপরও এক মাসকে আল্লাহর মাস বলার রহস্য হলো, এই মাসের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। তাই একে আল্লাহর মাস বলা হয়েছে। যেমন দুনিয়ার সব ঘরই আল্লাহর ঘর। তবে সব ঘরকে বাইতুল্লাহ বলা হয় না।
‘আল্লাহর মাস’ বলে মহররম মাসকে আল্লাহর সঙ্গে সম্বন্ধিত এর মর্যাদা তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া এই হাদিসের মাধ্যমে নবীজি ( সা.) মহররম মাসে অধিক রোজা রাখার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
মহররম মাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ একটি ফজিলত হলো, এই মাসের সঙ্গে তওবা কবুলের ইতিহাস সম্পৃক্ত।
মহররমের রোজার মধ্যে আশুরার রোজার ফজিলত আরো বেশি। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুল ( সা.)- কে রমজান ও আশুরায় যেরূপ গুরুত্বের সঙ্গে রোজা রাখতে দেখেছি অন্য সময় তা দেখিনি।’ (সহিহ বুখারি : ১/২১৮)
মহররম মাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ একটি ফজিলত হলো, এই মাসের সঙ্গে তওবা কবুলের ইতিহাস সম্পৃক্ত। একটি হাদীসে আছে-
আলী (রা.)-কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছিলেন, রমজানের পর আর কোনো মাস আছে, যাতে আপনি আমাকে রোজা রাখার আদেশ করেন? তিনি বললেন, এই প্রশ্ন রাসুলুল্লাহ ( সা.) – এর নিকট জনৈক সাহাবি করেছিলেন, তখন আমি তার খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, ‘রমজানের পর যদি তুমি রোজা রাখতে চাও, তবে মুহররম মাসে রাখ। কারণ, এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস: ১/১৫৭)