বাংলাদেশে কৃষকরা অবহেলিত, কৃষক ও কৃষি উন্নয়ন অত্যাবশ্যক—জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হলেও কৃষি ও কৃষকের কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। এখনও দেশের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ কৃষক হলে কৃষকরা আজও অবহেলিত। দেশের উন্নয়ন তরান্বিত করতে হলে এ দেশের কৃষক ও কৃষি উন্নয়ন অত্যাবশ্যক। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের মবশ্বির আলী বালক উচ্চবিদ্যালয়ে এক কৃষক সমাবেশে এ কথাগুলো বলেন ধান গবেষক বিশিষ্ট জিন বিজ্ঞানী অষ্ট্রেলিয়ার প্রবাসী ড. আবেদ চৌধুরী।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও কৃষক বন্ধু আহমদ সিরাজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. আবেদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার।
সমাবেশে এসেই ড. আবেদ চৌধুরী উপস্থিত ২০০ জন কৃষকের সাথে খুবই আন্তরিকভাবে কুশল বিনিময় করেন। এসময় ড. আবেদ চৌধুরী বলেন- আমি শুরু থেকেই ধানের গবেষণা করছি। কিভাবে উচ্চ ফলনশীন ধান উদ্ভাবন করা যায়, খরা ও বন্যা উপযোগী ধান চাষ করা যায়। সেই ভাবনায় কাজ করি। বর্তমান বিরুপ আবহাওয়ায় ধান চাষ করা নিয়ে আমি (তিনি) এক ফলনে ৫ বার ধান উৎপাদন করতে গিয়ে পঞ্চব্রীহি ধান করেছেন। তা হলে একবার রোপনে সারা বছরে ৫ বার পলন হবে।
তিনি মনে করেন, কৃষকদের ক্ষমতায়ন প্রয়োজন। কৃষির ফলনের মূল্য বার্ষিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। যেখানে গার্মেন্টস থেকে আসে ৪০ বিলিয়ন ও রেমিট্যান্স আসে ২০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এই বিশাল কৃষি খাতের কৃষকরা অবহেলিত। বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা মন্ডলীতে কৃষকদের প্রতিনিধি নেই। উপদেষ্টামন্ডলীর কেউ কৃষকদের সাথে সাক্ষাৎ বা তাদের অধিকার বা উন্নয়নের কোন কথা বলেননি। দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ ভাগ গ্রামে থাকে, তারা কৃষি নির্ভর।সুতরাং কৃষি তথা কৃষকের উন্নয়ন করতে হবে। নতুন দেশে, নতুন উদ্যোমে এই ভাবনা ছড়িয়ে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সংক্ষিপ্ত সফরে দেশে আসলে গ্রামের কৃষকদের নিয়ে কাজ করতে চান। তার অংশ হিসেবে আজ আলীনগর ইউনিয়নের মবশ্বির আলী বালক উচ্চবিদ্যালয়ে কৃষক সমাবেশে যোগ দিলেন। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন যখনই তারা ডাকবে তখনই তাদের মাঝে ছুটে আসবেন।
আয়োজকরা ছলিমগঞ্জ গ্রামে (আলীনগর ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ) ড. আবেদ চৌধুরী কর্তৃক উদ্ভাবিত পঞ্চব্রীহি ধানের প্রদর্শনী প্লট তৈরীর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন, যাতে স্থানীয় কৃষকরা এই নতুন জাতের ধানের জাত ও চাষপদ্ধতির সাথে হাতে-কলমে জ্ঞান লাভ করতে পারে।