কমলগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম’র স্বেচ্ছাচারিতা অনিয়মে ক্ষুব্ধ গ্রাহক

প্রকাশিত: ৭:২৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫

ধলাই ডেস্ক: মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) রঞ্জন কুমার ঘোষ বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, ভৌতিক বিল ও মিটার পরিবর্তনসহ নানা অজুহাতে গ্রাহকদের হয়রানি অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। তার অসদাচরণের অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় শত শত গ্রাহক।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার কমলগঞ্জ জোনাল অফিসে সরেজমিন গেলে বিদ্যুৎ গ্রাহক ও ভুক্তভোগিসহ স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য।

সরজমিনে পল্লী বিদ্যুৎ কমলগঞ্জ জোনাল অফিসে গেলে দেখা যায়, ডিজিএম এর রুমের টেবিলের সামনে বসে একজন গ্রাহক কথা বলছেন। গ্রাহকের সাথে তিনি খুব রাগান্নিত ভাবে কথা বলছেন, সেসময় ডিজিএম-এর চেয়ারের পাশে তার ছেলে মোবাইল গেম খেলছে। এসময় স্থানীয় একজন সংবাদকর্মী দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ডিজিএম তার কথা শুনার সময় নেই। বেরিয়ে পড়লেন অফিস থেকে। তখন অফিসের বাহিরে রাস্তার পাশে বিলের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলতে চেয়েছিলেন ওই সাংবাদিক। তার কথা না শুনে নিজের কাজ আছে বলে বাহিরে চলে যান ডিজিএম রঞ্জন কুমার ঘোষ।

এদিকে সালাউদ্দিন নামে কমলগঞ্জের একজন বিদ্যুৎ গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, ডিজিএম রঞ্জন কুমার ঘোষ কমলগঞ্জ জোনাল অফিসে যোগদানের পর থেকে যেমনখুশি তেমন অফিস করেন। কোনো সমস্যা নিয়ে আসলে পাত্তা দেননা। নিজের মনগড়া নিয়মে সবকিছু করেন। গ্রাহকের সাথে বাজে ব্যবহার করেন। এছাড়া রির্ডারম্যানরা বাড়িতে না গিয়ে অফিসে বসে বিল প্রস্তুুত করেন। গ্রাহকদের যেমন খুশি তেমন বিল দরিয়ে দেন।

তিনি আরও জানান, পল্লী বিদ্যুতের নিয়ম অনুযায়ী তিন মাসের অধিক সময় বিল পরিশোধ না করলে গ্রাহকদের নোটিশ দিতে হয়। ডিজিএম নোটিশ না করেই গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা করে থাকেন। সেই মামলা নিষ্পত্তি করতে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। তিনি একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে নানা অপকর্ম করছেন।

তিনি বলেন, ভৌতিক বিল ও মিটার পরিবর্তনসহ নানা অজুহাতে তাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে কয়েকগুন বেশি অর্থ। এতে তারা একদিকে হচ্ছেন হয়রানি শিকার। অন্যদিকে হচ্ছেন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

সিহাব উদ্দিন নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘আমরা সাধারণ আবাসিক গ্রাহক। আমাদের যাদের গত মাসে ৮০০ টাকা বিল এসেছে, এ মাসে ৪ হাজার টাকা বিল দিয়েছে। মিটার রিডিং পরীক্ষা করে দেখা যায়, ১৫০ থেকে ২০০ ইউনিট বেশি ধরে বিল করা হয়েছে। আমরা অফিসে অভিযোগ নিয়ে গেলে বলে সমন্বয় করে দেয়া হবে। কিন্তু তা করা হয় না। বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলের কারণে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।’

জাহেদ নামে আরেক এক গ্রাহক বলেন, ‘এখন দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তার ওপর বিদ্যুৎ অফিসের ভূতুড়ে বিলের অত্যাচারে নাভিশ্বাস অবস্থা। আমার ঘরে দুটি লাইট জ্বলে। ২০০ টাকা বিল আসতো। কিন্তু গত দুই মাস ধরে ৮০০ টাকা বিল আসছে। আমি রিকশা চালিয়ে যে আয় করি তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্ট হচ্ছে।’

ভুক্তভোগী অনেক গ্রাহকরা বলেন, ডিজিএমকে দ্রুত বদলি করা না হলে তারা মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি দেবেন।

জানতে চাইলে কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের দায়িত্বে থাকা ডিজিএম রঞ্জন কুমার ঘোষ বলেন, আমি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করিনা। অতিরিক্ত বিল আসার বিষয়ে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে। গ্রাহকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে দিকে নজর আছে। রিডিং অফিসে বসে করা হয়, সে বিষয়ে তিনি জানান, এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি, একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।