
কমলগঞ্জ সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রোববার বিকেলে আদমপুর ইউনিয়নের হকতিয়ারখোলা ও রহিমপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধে ২টি নতুন ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে প্রায় ২০টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। লাঘাটা ও ক্ষিরণী ছড়ার পানিও দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলার নতুন-নতুন এলাক প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যা পৌনে ৮টায় বর্তমানে ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ৫৮ সেমি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড, মৌলভীবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী। পানি বৃদ্ধি পেলে যেকোন সময় বড় ধরনের বন্যার আশংকা করছেন সাধারন মানুষ। কমলগঞ্জ পৌরসভা, রহিমপুর ও পতনঊষার ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
ধলাই নদীর পানি বেড়ে প্রতিরক্ষা বাঁধে নতুন ও পুরাতন ভাঙ্গন দিয়ে ২০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটায় কমলগঞ্জ পৌরসভার রামপাশা এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড প্লাবিত হয়। বিকেলে রহিমপুর ইউনিয়নের প্রতাপী এলাকায় পুরাতন ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ করে আশপাশের ৪/৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এদিকে বন্যার খবর শুনে সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ সদস্য, কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান, মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মামুনুর রশীদ, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক, পানি উন্নয়ন বোর্ড, মৌলভীবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।
এদিকে কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমেদ কমলগঞ্জ পৌর এলাকা ও রহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল নিজ ইউনিয়নের বন্যাক্রান্ত এলাকা পরিধর্শন করে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। অপরদিকে বৃষ্টি হলে আরো কয়েকটি ঝুকিপুর্ণ স্থানে ভাঙ্গনের আশংকা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, বন্য্ াদুর্গতদের জন্য ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২ মে.টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।
আদমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন জানান, রোববার বিকেলে হকতিয়ারখোলা শিক্ষক অরুন কুমার সিংহের বাড়ির কাছে ধলাই নদীতে প্রায় ৩০ ফুট পরিমান ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গনের ফলে হকতিয়ারখোলা, কেওয়ালীঘাট, জালালপুর, বন্দরগাঁও গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া ঘোড়ামারা গ্রামে পুরোনো ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে।
এদিকে রোববার কমলগঞ্জ পৌর এলাকা ও রহিমপুরে বন্যাক্রান্তদের মাঝে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমদ ও রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।