শ্রীমঙ্গলে ঈদ এলেই ব্যস্ততা বাড়ে কামার পল্লীতে

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০১৯
ছবি ধলাইর ডাক

শ্রীমঙ্গল সংবাদদাতা: দিন রাত টুং টাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বাজারসহ কামার পল্লী। কামার পল্লীগুলোতে এখন রাত-দিন চলছে কামারশালার শব্দ। কোরবানীর সময় যতোই ঘনিয়ে আসছে, ততোই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা।

কোরবানীর ঈদ সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। বছরের অন্য সময়গুলোতে কাজের তেমন চাপ না থাকলেও কোরবানীর সময় যেন দম ফেলার ফুরসৎ নেই তাদের। তবে, বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবারে সরঞ্জামের দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন কামারীরা।

পশু কোরবানীর দা-ছুরি ও চাপাতি-সহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে মানুষ ভীড় করছেন কামারশালায়। আবার কেউবা পুরোনো সরঞ্জাম মেরামত অথবা শান দিয়ে নিচ্ছেন।

প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব, আর্থিক সংকট-সহ নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প। পাশাপাশি কয়লা আর কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমান কমেছে বলেও জানান অনেকেই।

বর্তমান আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও পবিত্র ঈদুল আযাহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে এ শিল্প।

কামার পল্লীর শ্যামল দেব জানান, বছরের অন্যান্য দিনগুলোতে তেমন কাজ আসে না। কিন্তু কোরবানীর ঈদ আসলে কাজের চাপ বেড়ে যায়। দিন রাত কাজ করেও রেহাই পাওয়া যায় না।

কামার শিল্পী অপূর্ব দেব, সুধাংশু কর্মকার ধলাইর ডাক;কে বলেন, ৩৫ বছরের বেশী সময় ধরে এই ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছি। ঈদের আর কয়েকদিন বাকি থাকলেও পাইকারী দোকানদার ও খুচরা ক্রেতাদের চাহিদা সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা আরও বলেন, ঈদের আগ পর্যন্ত ঠিকমতো নাওয়া খাওয়ার সময় পাচ্ছে না।

কারিগররা জানান, কাঁচা-পাকা লোহা দিয়ে তৈরি করা হয় ধাতব যন্ত্রপাতি। তবে পাকা লোহার দা-ছুরির চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে এবং বেশি দামে বিক্রি হয়ে থাকে।

বিক্রেতারা জানান, দা আকৃতি ও লোহা ভেদে ১শ’ থেকে ৪শ’ ৫০ টাকা, ছুরি ৫০ থেকে ৩শ’ টাকা, চাকু প্রতিটি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা, হাড় কোপানোর চাপাতি প্রতিটি ২’শ থেকে ৪শ’ টাকা এবং ধার করার স্টিল প্রতিটি ৫০ টাকা করে বেঁচাকেনা হচ্ছে। পুরানো যন্ত্রপাতি শান দিতে বা “পানি” দিতে ১শ’৫০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে।

এদিকে দাম আগের তুলনায় বেশী হলেও বাধ্য হয়েই পশু কোরবানীর সরঞ্জাম কিনছেন ক্রেতারা।
কয়লা ও কাঁচামালের দাম সহনীয় রেখে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে সরকার এমটাই প্রত্যাশা কামারদের।