শ্রীমঙ্গল সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের নাহার ও লাংলিয়া পুঞ্জিতে যাওয়ার রাস্তাটি পাকা করণ না হওয়ার কারনে বৃষ্টি এলেই শহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে খাসিয়া পুঞ্জির দুই শতাধিক পরিবারের।
অনেক সময় বিপদজনক কর্দমাক্ত কাচা রাস্তায় জিপ গাড়ি ঝুকি নিয়েই চলাচল করে। অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে তাও বন্ধ হয়ে যা। ফলে শহরের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় বিঘ্নিত হচ্ছে এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর খাসিয়াদের স্বাভাবিক জীবনযাপন।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার পুঞ্জির দুরত্বের এই পুঞ্জিতে গিয়ে দেখা গেছে, শহর থেকে টিপরাছড়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা রয়েছে। বাকি ৫ কিলোমিটার আকাবাকা উচু নিচু পাহাড়ি মাটির রাস্তা। এই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। বৃষ্টির পানিতে রাস্তার মাটি গুলো কাদায় পরিনত হয়েছে। সরু এই রাস্তায় একটি গাড়ি আরেকটি গাড়িকে সাইড দিয়ে যাওয়ার জায়গা নেই। রাস্তার প্রায়ই জিপ গাড়ির চাকাগুলো কাদায় আটকে যাচ্ছে।
নাহার এক নং পুঞ্জির মান্ত্রী (গ্রাম প্রধান) ডিবারমিন পতাম ও নাহার-দুই নং পুঞ্জির মন্ত্রী (গ্রাম প্রধান) ফেরলি সুরং ধলাইর ডাক;কে বলেন, জিপ গাড়িতে করে উচু পাহাড়ি রাস্তায় আমরা চলাচল করি। বাচ্চারা খুবই ভয় পায়। সরকারের তরফ থেকে যদি এই রাস্তাটা পাকা করে দেওয়া হতো তাহলে আমাদের জন্য অনেক উপকার হতো। আমাদের এখানে উৎপাদিত পান, লেবু ইত্যাদি সহজে আমরা বাজারে পৌছাতে পারতাম। আমরা অনেক বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। রাস্তার জন্য অনেক আবেদন করেছি। রাস্তা পাকা না হওয়ায় আমাদের জীবনযাত্রায় অনেক বিঘ্ন ঘটছে।
এ রাস্তায় পান লেবু, আনারস ও পান বহনকারী জীপ গাড়ীর চালক খালেক মিয়া বলেন শহর থেকে ৪০মিনিটের দূরত্বে যেতে রাস্তার কারনে কয়েক ঘন্টা লেগে যায় অনেক সময় কাদায় গাড়ী আটকে থাকলে বা বিকল হয়ে গেলে দিন শেষ। রাস্তায় একটি গাড়ি আটকা পড়লে অন্যকোন গাড়ি আর যেতে পারে না। যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা অনেক ঝুকি নিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাই এই রাস্তায়।
খাসি (খাসিয়া) স্যোসাল কাউন্সিল এর প্রচার সম্পাদক সাজু মারছিয়াং বলেন, নাহার-এক নং খাসিয়া পুঞ্জিতে ৪০টি পরিবারে ২৫০ থেকে ৩০০ জন এবং নাহার দুই নং পুঞ্জিতে ৫০টি পরিবারে ৪০০জন ও লাংলিয়া পুঞ্জিতে ১০০ টি পরিবারের ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জন বসবাস করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যার কারনে এই রাস্তার জন্য এখানের মানুষ অনেক কষ্টে আছেন। শিক্ষার্থীরা রাস্তার কারনে নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্টানে যেতে পারেন না। সন্তানসম্ভবা নারীদের এক সপ্তাহ আগে থেকে শহরে নিয়ে আসতে হচ্ছে রাস্তার কারনে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে দ্রুত এই রাস্তাটি পাকা করার অনুরোধ জানান তিনি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, পুঞ্জিবাসীর যাতায়াত সুবিধার জন্য আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে রাস্তা দুটি পাকাকরণের সুপারিশ করে এর আগে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে সহযোগিতা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। আবারো চিঠি পাঠাবো। বরাদ্দ এলে কাজ শুরু হবে।