ধলাই ডেস্ক: গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকায় মাদকাসক্ত ছেলেকে গলা কেটে হত্যার দায়ে বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গ্রেফতার মো. ওমর ফারুক (৬০) নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থানার কানুহারী গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার বানিয়ারচালা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
জানা যায়, মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে ক্ষোভে দুঃখে বাবা ওমর ফারুক তার সন্তান মো. আশরাফুল আলমেকে গলা কেটে হত্যা করেছে। এ মামলার একমাত্র আসামি ওমর ফারুককে নেত্রকোণা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সোমবার বিকেলে গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গত ৬ মে সন্ধ্যায় ভাড়া বাড়ির একটি ঘর থেকে মো. আশরাফুল আলমের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে জয়দেবপুর পুলিশ। ঘটর পরদিন ছেলে হত্যার ঘটনায় মা মোছা. দিলুয়ারা আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশের পাশাপাশি গাজীপুর পিবিআই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে রোববার রাতে নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানার কান্দুরা এলাকা থেকে ছেলে হত্যার অভিযোগে বাবা ওমর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান জানান, ভিকটিম আশরাফুল আলম নেশাগ্রস্ত হয়ে বাসায় আসতেন এবং পরিবারের কাছে নেশার জন্য টাকা দাবি করতেন। তার বাবা-মা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করতেন।
গত ৫ মে রাতে আশরাফুল বাজার থেকে একটি ধারালো চাপাতি কিনে ভাড়া বাসায় আনেন এবং শ্বশুড়বাড়ি যাওয়ার জন্য বাবা ওমর ফারুকের কাছে তার মাসিক বেতন ৯ হাজার টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা চান। বাবা-মা টাকা দিতে না চাইলে বাজার থেকে কেনা চাপাতি দিয়ে তাদের টুকরো টুকরো করে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন। ওইদিন রাতে ছেলে আশরাফুল বাসায় আসায় রুমের স্বল্পতার কারণে আশরাফুল ও তার বাবা তাদের ভাড়া ঘরে এবং মা পাশের রুমের অন্য ভাড়াটিয়ার ঘরে রাত যাপন করেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাবা ওমর ফারুক তার স্ত্রীকে ফোন করে দ্রুত ঘরের বাইরে আসতে বলেন। স্ত্রী বাইরে আসলে ওমর ফারুক তাকে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হয়ে বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ডে চলে যান। এ সময় স্ত্রী তাকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ওমর ফারুক জানান ভাড়াকৃত রুমে আশরাফুলকে ঘুমন্ত অবস্থায় ছেলের কেনা চাপাতি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছেন।