ডেস্ক রিপোর্:ঈদের ছুটিতে রাজধানী মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানায় মানুষের ঢল নেমেছে। ঈদের দ্বিতীয় দিনে (বৃহস্পতিবার) রেকর্ড পরিমাণ দুই লাখেরও বেশি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকেই স্রোতের মতো মানুষ চিড়িয়াখানা অভিমুখে ছুটে আসে। চিড়িয়াখানার কিউরেটর এস এম নজরুল ইসলাম বিকেল সাড়ে ৫টায় জানান, চিড়িয়াখানায় তিলধারণের জায়গা নেই। প্রতিটি খাঁচার সামনেই উপচে পড়া মানুষের ভিড়।
তিনি জানান, জিরাফ, সিংহ ও বাঘের খাঁচার সামনেই সবচেয়ে বেশি ভিড়। তবে কোনো খাঁচার সামনে মানুষ নেই এমন খাঁচা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আজও দর্শনার্থীর সংখ্যা দুই লাখের কম হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সম্প্রতি বছরগুলোর মধ্যে গতকালই চিড়িয়াখানায় সর্বোচ্চ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। তবে গত বছর কোরবানি ঈদের তৃতীয় দিনে প্রায় দুই লাখ দর্শনার্থী হয়েছিল।
জানা গেছে, সকাল ৮টা থেকে চিড়িয়াখানার প্রবেশদ্বার খোলা হলেও তার আগে থেকেই চিড়িয়াখানায় অসংখ্য নারী, পুরুষ ও শিশুরা ছুটে আসে। ৩০ টাকার টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। বেলা যত বাড়তে থাকে মানুষের ভিড় ততই বাড়তে থাকে। ১৪টি টিকিট কাউন্টারের প্রতিটিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলেও বেলা ১১টার পর মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডে যানবাহনের যানজট লেগে যায়। শুক্রবার জুমার দিন চিড়িয়াখানা মসজিদে পাঁচ হাজারেরও বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করেন।
জাতীয় চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ১৩৭ প্রজাতির ২৭৬২টি প্রাণী রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখির মধ্যে রয়েছে হরিণ, বাঘ, চিতা বাঘ, বানর, ভাল্লুক, সিংহ, হাতি, জলহস্তী, গন্ডার, ঘোড়া, জিরাফ, জেব্রা, মায়া হরিণ, সাদা হংস, উট, বানর, বনগরু, শিয়াল, অজগর, ময়ূর, কাকাতুয়া, উটপাখি, প্যাঁচা, হুতুমপ্যাঁচা, টিয়া, ময়না।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর নজরুল ইসলাম বলেন, দর্শনার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে চিড়িয়াখানায় ঘোরাঘুরি করতে পারেন এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা না ঘটে সেজন্য ঈদে রয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দায়িত্বে রয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ, র্যাব, আনসার, পোশাকধারী পুলিশ ও চিড়িয়াখানার নিজস্ব নিরাপত্তা সদস্য। এছাড়া দর্শনার্থীদের সুবিধায় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে ১৫টি মনিটরিং সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চিড়িয়াখানার একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকা শহরে বিনোদনের জায়গা বড্ড অভাব। বেসরকারি বিনোদন কেন্দ্র থাকলেও সেগুলো সাধারণ মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এ কারণে মানুষ চিড়িয়াখানায় ছুটে এসেছে।