নগ্ন অবস্থায় আসামীকে ধরিয়ে নেওয়ায় গ্রামবাসী ও বিজিবি’র ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ১০

প্রকাশিত: ৯:০৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০১৯

কুলাউড়া সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সীমান্ত এলাকায় নগ্ন অবস্থায় এক আসামীকে ধরিয়ে নেওয়া কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ও বিজিবি সদস্যদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গ্রামবাসীর প্রায় ১০জন আহত হয়েছেন। গত বুধবার রাত পৌনে ৭টায় উপজেলার ইটারঘাট বাজারে এ ঘটনা ঘটছে।

ঘটনায় বিজিবি পক্ষে ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ হয়। এরপর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি শ্রীমঙ্গল সেক্টরের ৪৬ ব্যাটলিয়ন ও সিলেট সেক্টরের ৪৮ ব্যাটলিয়ন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে ধরিয়ে নেওয়া লোক একজন চিহ্নিত চোরা কারবারী বলে বিজিবি দাবি। এ ঘটনায় বিজিবি ৪জন সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় বিজিবির সেক্টর কামান্ডার পর্যায়ের উর্ধ্বতন একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ ও তদন্ত করেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ী লোকমান আলী (৪০) বাজারে এক দোকানে বসে চা খাচ্ছিল। এ সময় ৬ বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থল এসে লোকমান আলীকে ধরে নিয়ে যায়। নেওয়ার সময় বিজিবি সদস্যদের ধস্তাধস্তিতে আটক লোকমান আলীর পরনের লঙ্গি খোলে উলঙ্গ হওয়ায় বাজারের লোকজন তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়।

এসময় বিজিবি ও বাজারের লোকজনের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে মুক্তিযোদ্ধা সোহাগ মিয় (৭৫), আব্দুল কাইয়ুম (৪০), চা শ্রমিক রামচন্দ্র ভর (৩০)সহ ১০-১২জন আহত হয়। আহত হয়েছেন বিজিবির চার সদস্য। তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি সিলেট সেক্টরের ৪৮ ব্যাটেলিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর নাজমুল সাকিব, ৪৬ ব্যাটলিয়ন শ্রীমঙ্গল সেক্টরের সুবেদার আবু জামান, আমতৈল ক্যাম্পের কোম্পানী কামান্ডার আব্দুর রউফ এবং শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনাব আলী, মো. খলিল মিয়াসহ ইউপি সদস্যগন।

বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুল হক জানান, বিজিবি ৪ সদস্য আহতের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লোকমান এলাকার চিহ্নিত চোরাকারবারি। হামলায় জড়িতরাও চোরাচালানের সাথে যুক্ত থাকায় বিজির উপর ইট পাকটেল মেরে হামলা চালায়। লোকমানের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানায় মামলা দায়ের করা হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন মিয়া বলেন, একজন লোককে ধরে উলঙ্গ করে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। নিরিহ মানুষকে হয়রানী না করে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ইউপি সদস্য।
শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনাব আলী জানান, পরিস্থিতি আপাতত শান্ত আছে।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান জানান, থানায় এখন কোন মামলা হয়নি। মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিদর্শণ শেষে বিজিবি সিলেট সেক্টরের ৪৮ ব্যাটেলিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর নাজমুল সাকিব জানান, এলাকাবাসী যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা ঠিক নয়। অপরাধী গ্রেফতারে গ্রামবাসীর সহযোগিতা করা উচিত ছিলো। তবে গ্রামবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী উলঙ্গ অবস্থায় যদি বিজিবি লোকমান মিয়াকে নিয়ে আসে সেটাও উচিত হয়নি। তবে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।