ডেস্ক রিপোর্ট: ভারি বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপ বাড়ায় কাপ্তাই বাঁধের ১৬ স্পিলওয়ে’র সবগুলো এক ফুট করে আজ রাতেই খুলে দেয়া হবে। ফলে বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা পূর্ব চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়াখালী ও পটিয়া উপজেলা নতুন করে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের জারি করা এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাপ্তাই বাঁধের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে হ্রদে ২০ ফুট পানি বেশি রয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে উজান থেকে ধেয়ে আসছে পাহাড়ি ঢল। বাড়তি পানির চাপ সামলাতে আজ রাতে বাঁধের ১৬টি গেট একফুট করে একসঙ্গে খুলে দেয়া হবে। প্রতি সেকেন্ডে কর্ণফুলী নদীতে ছাড়া হবে ১৮ হাজার কিউসেক পানি । এ কারণে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়াখালী ও পটিয়া প্লাবিত হতে পারে, নদী চ্যানলে তীব্র স্রোতের কারণে নৌযান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ড. এম এম এ আব্দুজ্জাহের জানান, টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল নামতে থাকায় রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ক্রমাগত বাড়ছে। এতে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বেড়েছে। পানি বাড়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের সবগুলো দিয়ে একযোগে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত হ্রদের পানির উচ্চতা ছিল ১০৬.২ ফুটে এমএসএল (মিনস্ সি লেভেল)। এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট দিয়ে উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০২ মেগাওয়াট। কিন্তু এরপরও পানি বাড়তে থাকায় হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে। এ কারণে আজ রাত থেকে অতিরিক্ত পানি কর্ণফুলি নদীতে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় রাঙ্গামাটি শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় হ্রদ তীরবর্তী বসতবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
টানা ১০ দিনের বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বাঁশখালী, পটিয়া, আনোয়ারা, হাটহাজারী, সাতকানিয়া, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী উপজেলার প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ গত এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি। অনাহারে-অর্ধাহারে দিনযাপন করছেন তারা। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-বান্দরবান ও চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক। এ অবস্থায় কাপ্তাই হ্রদের পানি কর্ণফুলিতে ছাড়া হলে পূর্ব ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।