আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ায় দুই হাজার বছরের পুরোনো কবর থেকে একটি ‘স্মার্টফোন’ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ঘটা করে এ খবর প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, ফোনটি মার্কিন মুঠোফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের।
তবে দুই হাজার বছরের পুরোনো কবরে ‘আইফোন’ গেলো কীভাবে তার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা কেউই দিতে পারেনি।
যে কবরটি থেকে ওই ‘স্মার্টফোনটি’ খুঁজে পাওয়া গেছে সেটি এক তরুণীর। কবরটি রাশিয়ার সায়ানো-শুশেনস্কায়া বাঁধের কাছের আলা নামের এক জলাধারে অবস্থিত। সেখানকার পানি সরাতে গিয়েই বেশ কয়েকটি প্রাচীন কবরের সন্ধান মিললে সেখান থেকেই ওই ‘স্মার্টফোন’ উদ্ধার করা হয়।
রাশিয়ার তুভা অঞ্চলে অবস্থিত ওই কবরের এলাকাকে মূলত দ্য রাশিয়ান আটলান্টাস নামে পরিচিত। বছরের বেশিরভাগ সময় এলাকাটি পানির নিচে তলিয়ে থাকে। শুধু মে আর জুন মাসে পানির স্তর নেমে গেলে গবেষকরা সেখানে নানান কিছুর খোঁজ চালান।
স্থানীয় গণমাধ্যম সাইবেরিয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওই কবরে সমাহিত তরুণীর নাম নাতাশা। তিনি এক ধনী পরিবারের সন্তান ছিলেন। সাইবেরিয়ান টাইমস বলছে, ‘আইফোনটি’ চীনা উইঝু নামের রত্নখচিত মুদ্রা দিয়ে সাজানো ছিল।
প্রত্নতত্ত্ববিদ ও বিশেষজ্ঞরা দাবি করছে, কবরটি ২ হাজার ১৩৭ বছর আগে জিওনগু শাসন আমলের। মরদেহটি সম্ভ্রান্ত হুন তরুণীর। তার পরিবার দক্ষিণ রাশিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলে থাকতেন। কবরগুলো খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকের।
সেন্ট পিটার্সবার্গ ইনস্টিটিউট অব ম্যাটেরিয়াল হিসটোরি কালচারের গবেষক ড. ম্যারিনা কিলুনোভস্কায়া ওই এলাকাটিকে ‘বৈজ্ঞানিক আশ্চর্য’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, তার প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযান পরিচালনাকারী দল ‘অবিশ্বাস্যভাবে সৌভাগ্যবান’ যে তারা প্রাচীন কবরস্থান আবিষ্কার করেছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক ড. পাভেল লিওস বলেন, ‘নাতাশার কবরটি হুনু-যুগের (জিওনগু)। সেখানে “আইফোন” পাওয়ায় ব্যাপারটি এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই কবরের হাড়গোড়ের সঙ্গে বেল্ট ছিল। বেল্টটি চীনের উজহু মুদ্রায় সজ্জিত ছিল। আর সে কারণে এটি কোনো সময়ের, তা জানতে সুবিধা হয়েছে।‘
স্মার্টফোনের মতো যে ধাতব বস্তুটি পাওয়া গেছে সেটি দৈর্ঘ্য ১৮ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থ ৯ সেন্টিমিটার। তার বেল্টটি বিলাসবহুল রত্নপাথর দিয়ে মোড়ানো। যে মুক্তা দিয়ে সেটি সজ্জিত ছিল তাকে বলা হয় সকল মুক্তার মা। আর নাতাশার বেল্টটি চীনের উইঝু কয়েন দিয়ে খচিত।’