ধলাই ডেস্ক: খাবারের খোঁজে প্রায়ই লোকালয়ে আসছে হাতির দল। খেতের ফসলের পাশাপাশি ক্ষতি করছে ঘরবাড়িরও। হাতির ভয়ে এখন রাতের ঘুম উড়ে যায় মানুষের। জঙ্গল আর পাহাড়ে পর্যাপ্ত খাবার মিলছে না বলেই খাবারের খোঁজে লোকালয়ে আসছে হাতি।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে কিছুদিন পরপর তাণ্ডব চালায় বন্য হাতির একটি দল। সন্ধ্যার পর একজোট হয়ে হাতির দল আক্রমণ করে। আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টাও করে স্থানীয়রা। কিন্তু বন্য হাতির তাণ্ডব নতুন নয়। প্রতিবছর হাতির পাল বেরিয়ে এসে গ্রামে ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
কেইপিজেড ও দেয়াঙ পাহাড়ে দিন দুপুরে কিংবা রাতে বন্য হাতির দলকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। রাত হলেই এসব হাতি লোকালয়ে ঢুকে বিভিন্ন গাছপালা ও স্থাপনা ভেঙে ক্ষতি করেছে প্রতিদিনই।
গত মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের হাজী লাল মিয়ার বাড়িতে হাতির একটি দল তাণ্ডব চালায়। এ সময় হাতির আক্রমণে অনেকের বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়া একই গ্রামের নুরুল হকের পুত্র আবদুল করিম (৩৮) হাতির আক্রমণে গুরুত্বর আহত হন। নষ্ট হয় অনেক জমির ফসল।
এর আগে উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের আলী হোসেন মার্কেট এলাকায় ফজরের নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে মসজিদে যাওয়ার পথে বন্য হাতির আক্রমণের মুখে পড়েন মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. জরিফ আলী (৬০) তাঁর এক পা ও এক হাত ভেঙে যায়।
অন্যদিকে কর্ণফুলী উপজেলার কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (কেইপিজেড) ও আশপাশের লোকালয়ে বন্য হাতির ভয়ে আতঙ্কে রাত কাটছে সাধারণ মানুষের। কয়েক মাস পরপর কেইপিজেডের পাহাড়ে অবস্থান নেয় হাতির দল। সন্ধ্যা নামলেই সড়কে ও লোকালয়ে চলে আসে। এ কারণে কেইপিজেডের দায়িত্বরত শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা প্রহরী ও আশপাশের এলাকাবাসীরদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, ‘কিছুদিন পরপর কেইপিজেডের অবস্থান নেওয়া হাতিগুলো গ্রামে ঢুকে আমাদের ঘরে ভাঙচুর করে, ফসলি জমির ধানগুলো সব নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আহ্বান করছি।’
বড়উঠান ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ মুছা বলেন, কেইপিজেডের পাহাড় থেকে আসা বন্য হাতির একটি দল লোকালয়ে ঢুকে বসতঘরে ভাঙচুর, ফসলি জমির ধান নষ্ট ও মানুষের উপর হামলা করছে। হাতিগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।
কর্ণফুলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা বলেন, হাতি গুলোর বিষয়ে বন বিভাগ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।