ডেস্ক রিপোর্ট: সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ফরিদপুরে দায়ের করা মামলায় নয়জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের বিশেষ দায়রা জজ (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) আদালতের বিচারক মো. মতিয়ার রহমান আট আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামিদের হাজতবাস যেদিন থেকে শুরু হয়, সেদিন থেকে তাদের কারাদণ্ডের মেয়াদ গণনা শুরু হবে বলে আদালত জানায়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ফরিদপুরের বোয়ালমারীর দুর্গাপুর গ্রামের আমীর সোহেল মিয়া, ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর এলাকার রায়হান মোল্লা, মধুখালী উপজেলা মথুরাপুর গ্রামের আমীর হোসেন, একই উপজেলা শ্রীপুর গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন ও ভাটি মথুরাপুর গ্রামের মো. খলিলুর রহমান, বোয়ালমারী বাজার এলাকার মাসুম বিল্লাহ, হাবেলী দয়ারামপুর এলাকার আব্দুল গাফফার, শহরের আলীপুর এলাকার মুর্তজা (পলাতক) ও মাদারিপুরের রাজৈর উপজেলার মজুমদারকান্দি গ্রামের মাওলানা আব্দুর রউফ। তাদের মধ্যে পলাতক মুর্তজার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এছাড়া অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলী মহল্লার মিজানুর রহমান মুকুল, শহরের টেপাখোলা মহল্লার মো. ইউসুফ আলী ওরফে আল্লামা ইউসুফ, আলফাডাঙ্গা উপজেলার হিদাডাঙ্গা গ্রামের ইয়াসিন সিকদার, বাগেরহাট মোল্লাহাট উপজেলার শাষণ গ্রামের মো. তরিকুল ইসলাম ওরফে শুকুর এবং শহরের মুজিব সড়কের আরিফ খানকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
মামলার সূত্র বলছে, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ফরিদপুরের আটটি গুরুত্বপূর্ণস্থানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওইদিনই কোতয়ালী থানার এসআই মোসাদ্দেক আলী হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলাটি দায়ের করেন। এরপর মামলা তদন্ত শেষে ১৫ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। তাদের মধ্যে মাওলানা শহিদুল ইসলাম নামে একজন আসামি মামলা চলাকালীন অবস্থায় মারা যান।
এ মামলায় সরকার পক্ষের কৌসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী বাবু মৃধা জানান, ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়। এ রায়ে আমরা একদিকে খুশি হয়েছি। তবে পাঁচ আসামিকে খালাস দেয়ায় আমরা আপিল করব।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া জানান, তারা ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হয়েছেন। উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
এদিকে এ রায়কে কেন্দ্র করে বুধবার কোর্ট চত্বর এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।