ধলাই ডেস্ক: কী বীভৎস! রাতে স্বামী বাসায় ঢোকার পর আদুরে হাতে জুস খাওয়ান ফাতেমা। কিন্তু সেই গ্লাসে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ মিশ্রণের কথা জানতেন না স্বামী। কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়ে গেলে স্ত্রীর সেই আদুরে হাত হয়ে ওঠে ভয়ংকর। একে একে শরীর থেকে আলাদা করেন স্বামীর মাথা, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ।
রাজধানীর মহাখালী থেকে মাথা ও হাত-পা বিহীন খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এমন লোমহর্ষক তথ্য পায় ডিবি।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, নিহত ময়না মিয়ার প্রথম স্ত্রী ফাতেমা খাতুন তাকে জবাই করে হত্যা করেন। লাশ গুম করতে হাত-পা ও মাথা কেটে ছয় টুকরো করে বিভিন্ন এলাকায় ফেলে দেন ফাতেমা।
তিনি বলেন, খণ্ডিত মরদেহের উদ্ধারের পর নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তার স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর বনানীর কড়াইল বস্তি এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিহতের প্রথম স্ত্রী মোছা. ফাতেমা খাতুনকে গতকাল সোমবার গ্রেফতার করে ডিবি গুলশান বিভাগ।
গত ২৩ মে থেকে ময়না মিয়া প্রথম স্ত্রী ফাতেমার সঙ্গে ছিলেন। টাকা-পয়সার ভাগাভাগি নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। তখনই ফাতেমা স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী স্বামীকে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। এতে ময়না মিয়া নিস্তেজ হয়ে টানা একদিন ঘুমান। পরের দিন ময়না মিয়া একটু সতেজ হলে আবারো তাকে জোর করে ওষুধ মিশ্রিত জুস খাইয়ে দেয়া হয়। এরপরই ময়নার হাত বেঁধে ফেলেন ফাতেমা।
আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, এ সময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে খাট থেকে দুজনই পড়ে যান। তখন ফাতেমা ছুরি দিয়ে ময়না মিয়ার বুকের ওপরে বসে গলা কাটেন। পরে ময়না মিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশ গুম করতে মাথা ও হাত পা কেটে আলাদা আলাদা ব্যাগে ঢুকান ফাতেমা। পরবর্তীতে একটি রিকশায় করে ব্যাগগুলো নিয়ে মহাখালী ও গুলশান লেক এলাকায় ফেলে দিয়ে যান।
এর আগে, রোববার রাতে মহাখালী এলাকা থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের পর ওয়ারলেস এলাকার টিএনটি মাঠ সংলগ্ন ঝিল থেকে মাথা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া মহাখালীর আমতলি এলাকা থেকে কাটা দুই হাত ও পা উদ্ধার করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ।

