ডেস্ক রিপোর্ট: কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নীচে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। অনবরত বৃষ্টির কারণে শুক্রবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
সিলেটের আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত হয়েছে ১২ মিলিমিটার। আগামী তিন থেকে চার দিন প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হবে।
এদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন নিচু এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। জেলা ও উপজেলা শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে অর্ধ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। এছাড়া প্লাবিত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।
অপরদিকে জেলার গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারিতে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্রাশার মেশিন বন্ধ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া নৌযান থেকে পাথর লোড-আনলোড করতে না পারায় বেকার শত শত শ্রমিক। এ দুর্ভোগের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাদের অর্থসংকটও।
কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর ইউপির চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানান, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদের পানি বাড়ছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ও অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত ১০০টির গ্রামের মানুষ। উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া ৬০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও বিজেন ব্যানার্জী জানান, বন্যাকবলিত কিছু এলাকা পরিদর্শন করেছি। উপজেলার সব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলার সব দফতর পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। তাছাড়া একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হচ্ছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও পানিবন্দী মানুষের সহযোগীতায় সরকার প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রয়েছে। ধলাইয়ের উৎস মুখে পানির স্রোত বেশি থাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্রলার চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
গোয়াইনঘাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম জানান, উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন নিচু এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার দুটি পাথর কোয়ারি বন্ধ রয়েছে। প্রায় ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।
গোয়াইনঘাটের ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়ার খবর পেয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। উপজেলার প্রত্যক ইউপির চেয়ারম্যানদেরকে বন্যা পরিস্থিতির রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী ত্রাণসহ প্রয়োজনীয় সবধরনের সহায়তা দেয়া হবে।