আপেলের সবচেয়ে বেশি উপকারী অংশটি ফেলে দিচ্ছেন না তো?

প্রকাশিত: ৭:৫৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২০
ফাইল ছবি

লাইফস্টাইল ডেস্ক: কথায় আছে, প্রতিদিন একটি আপেল খেলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের অনেক রোগ থেকেই দূরে রাখে এই সুস্বাদু ফলটি।

ফাইবার, পুষ্টি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ আপেল দ্রুত ক্ষুধা মেটাতে কিংবা শরীরচর্চার পর দ্রুত শক্তি যোগাতে খুবই উপকারী। তাইতো সকালের খাবার কিংবা টিফিনের জন্য আপেল দারুণ উপযোগী।। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে যে, আমরা আপেলের সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর অংশটিই ফেলে দেই! চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-

স্বাস্থ্যকর অংশ

অনেকেই মনে করেন আপেলের খোসা সবচেয়ে বেশি উপকারী। আসলে এই ধারণাটি একদম ভুল। আপেলের একেবারে ভেতরের অংশ, যা আমরা আপেল কাটার পরে বাদ দিয়ে দেই, আসলে সেটিই বেশি উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে যে, আপেলের মূল অংশটি বাইরের অংশের চেয়ে ১০ গুণ বেশি স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া সরবরাহ করতে পারে।

গবেষণা

২০১৯ সালে জার্নাল ফ্রন্টিয়ার্স ইন মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, একটি কোর বা মূল অংশে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা বেশিরভাগ লোকের কাছে উপেক্ষিত। একটি সম্পূর্ণ আপেল (কোর সহ) প্রায় ১০০ মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া ধারণ করে। যার মধ্যে আপেলের মাংসল অংশে মাত্র ১ কোটি রয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে, আপেলে পাওয়া ব্যাকটেরিয়া বেশ স্বাস্থ্যকর এবং অন্ত্রের জীবাণুগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। স্বাস্থ্যকর অন্ত্রে মাইক্রোবায়োটা থাকা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি আমাদের অনেক রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে। আপেলের কোর-এ প্রোটিন, ফাইবার এবং তেল থাকে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ক্যান্সার বিরোধী যৌগতে ভরা।

বীজ গ্রহণের সঙ্গে ঝুঁকি জড়িত

আপেলের কোর সাধারণত আপেলের বীজের কারণেই বাদ দেয়া হয়। আমরা মূলত ফল বা শাক-সবজির বীজ ফেলে রাখি কারণ এগুলোতে অ্যামিগডালিন নামে একটি যৌগ থাকে, যা বিষাক্ত বলে বিবেচিত হয়। এই যৌগটি যখন আমাদের পাচনতন্ত্রের সংস্পর্শে আসে তখন এটি সায়ানাইড নিঃসরণ করে, যা একটি মারাত্মক বিষ।

আপেল বীজ কি বিষাক্ত?

রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রসমূহের (সিডিসি) হিসাবে, ১-২ মিলিগ্রাম সায়ানাইডের মৌখিক ডোজ মারাত্মক হতে পারে। তবে আপেল বীজে (একটি আপেল) অ্যামিগডালিনের পরিমাণ এই সংখ্যার সঙ্গে মেলে খুব কম। শরীরে এই পরিমাণ টক্সিন তৈরি করতে প্রায় ২০০টি আপেলের বীজ লাগবে।

আপেল বীজ খাওয়া উচিত?

নিঃসন্দেহে আপেলের বীজ সম্পর্কে এই নতুন গবেষণাটি আকর্ষণীয়। তবে এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কিছু গবেষণা অনুসারে, আপেলের বীজ খাওয়ার কোনো ক্ষতি নেই, আবার অন্যরা মনে করেন ফল খাওয়ার আগে এগুলো ফেলে দেয়া ভালো। তাই আপেলের বীজ খাওয়া নিয়ে কোনোরকম সিদ্ধান্তে যাওয়ার আগে আরো অনেক গবেষণা প্রয়োজন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া