ঈদে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কমলগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্রগুলো

প্রকাশিত: ৫:২২ অপরাহ্ণ, জুন ৩, ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার: অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা। মৌলভীবাজার জেলার সর্বাধিক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে কমলগঞ্জ উপজেলায়। পর্যটন ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনাময় এই উপজেলায় ২০টিরও বেশি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, পদ্মকন্যা নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রভাত, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, বণ্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য রাজকান্দি বন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, ঐতিহ্যবাহী লক্ষীনারায়ন দিঘী, ২০০ বছরের প্রচীন ছয়চিরী দিঘী, শমসেরনগর বাগীছড়া লেক, আলীনগর পদ্মলেক, মাগুরছড়া পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ড, অপরূপ শোভামন্ডিত উঁচু নিচু পাহাড়বেস্টিত সারিবদ্ধ চা বাগানসহ বাংলাদেশের বৃহৎ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মণিপুরী সম্প্রদায়ের নিরাপদ আবাসস্থল এ উপজেলায়। তাছাড়া প্রকৃতির পূজারী খাসিয়া নৃ-গোষ্ঠীসহ গারো, সাঁওতাল, মুসলিম মণিপুরী, টিপরা ও গারোদের নিরাপদ আবাসস্থল রয়েছে এই উপজেলায়। নাগরিক জীবনের শতব্যস্ততার মধ্যে একটু ছুটি মিললেই অনেকেই ছুটে যান সাগর-পাহাড়-অরণ্য ও ঐতিহ্যের সান্নিধ্যে। ঐতিহাসিক ও প্রতœতাত্ত্বিক স্থানগুলোও মুখরিত হয় পর্যটক দর্শনার্থীদের পদভারে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে পর্যটকদের বরন করতে প্রস্তুত কমলগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এসব পর্যটন কেন্দ্রগুলোও পর্যটকদের বরণ করতে ইতিমধ্যে সেরে নিয়েছে সাজসজ্জা। ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি পর্যটন রাজ্য কমলগঞ্জের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে ছুটে আসেন নানা শ্রেণী পেশার হাজার হাজার দেশী-বিদেশী পর্যটক।

ইতিমধ্যে বন বিভাগের রেস্টহাউজের পাশাপাশি হীড বাংলাদেশের রেষ্টহাউসসহ অন্যান্য রেষ্ট হাউস ও হোটেলগুলোর রুম অগ্রীম বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা । এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যটক পুলিশের পাশাপাশি কমলগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এবার নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উপজেলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জীবনধারা ও সংস্কৃতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ জনপদে অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর সাথে সদ্য আবিস্কৃত নতুন সংযোজন ফিকল জলধারা যে কোনো পর্যটকের দৃষ্টি কেড়ে নেবে। তাই তো পবিত্র ঈদুল ফিতরে এসব আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি কমলগঞ্জের বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে দর্শণীয় ও আকর্ষণীয়। লাউয়াছড়া দেশের ১০টি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে একটি।

এ উপজেলায় পাহাড়ি উঁচুনিচু টিলার উপর সবুজ চা বাগান, জাতীয় ফুল দুর্লভ বেগুনি শাপলার আধিপত্য আপনাকে আনন্দের বাড়তি মাত্রা যুক্ত করবে পদ্মকন্যা মাধবপুর লেক। মাধবপুর লেকের দৃশ্য উপভোগ করে বেরিয়ে এসে একই রাস্তায় প্রায় ১০ কিঃমিঃ যাওয়ার পরই বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ। চাইলেই ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকে। কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে রাজকান্দি বন রেঞ্জের কুরমা বনবিট এলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে দৃষ্টিনন্দন হামহাম জলপ্রপাত। সেখানে সরাসরি যানবাহন নিয়ে পৌঁছার ব্যবস্থা নেই। বাসে এবং সিএনজি যোগে যাওয়ার পর বাকি পথ হেঁটে যেতে হয় হামহাম জলপ্রপাত হামহাম জলপ্রপাতে ভ্রমণ করতে পুরো একদিনের প্রয়োজন। এছাড়া ঘুরে আসতে পারেন ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ডবলছড়া খাসিয়া পল্লী থেকে। ডবলছড়া খাসিয়া পল্লীতে আড়াইশ’ ফুট উপরের হেডম্যান বা মন্ত্রীর বাংলোটি দেখতে খুবই সুন্দর। এ ছাড়াও ভ্রমণের জন্য রয়েছে কমলগঞ্জে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের নীরব সাক্ষী বধ্যভূমি, ব্রিটিশদের শোষণের প্রতীক তিলকপুর নীলকুটি, ঘটনাবহুল মাগুরছড়া গ্যাসফিল্ড।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুর রহমান জানান, ঈদের দিন ও ঈদের পরের ছুটির দিনগুলোতে পুলিশি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।