কমলগঞ্জে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার ক্ষোভে জ্বলছে কৃষকের মনঃ আউশ ধানের জমি ফাঁকা রেখে ক্ষোভ প্রকাশ

প্রকাশিত: ১১:৪২ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার: বোরো উৎপাদনের পর ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কৃষি অধ্যুষিত কমলগঞ্জে আউশ উৎপাদনে কৃষকরা অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন। ক্ষোভে ধানের চারা রোপন থেকে বিরত রয়েছেন। ফলে আউশ আবাদকৃত বিস্তৃর্ণ জমির অধিকাংশ মাঠ পরিত্যক্ত পড়ে রয়েছে। পরবর্তী আমন চাষাবাদেও এর প্রভাব পড়বে বলে কৃষকরা অভিযোগ তোলেছেন।

কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, সার, বীজ, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি, ধান কাটা, মাড়াই থেকে শুরু করে বোরো উৎপাদনে বিঘা প্রতি সাড়ে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। এতে ধানের মণ ৬শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা খরচ পড়ে। বিক্রির সময়ে এবং বর্তমান বাজার মূল্য সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা। এভাবে ভতুর্কী দিয়ে কৃষকদের ক্ষতি গুণতে হচ্ছে। উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক মোবাশ্বির আলী বলেন, ‘গত বছর ২০ বিঘা জমিতে আউশ চাষাবাদ করলেও এবার কোন জমিই চাষাবাদ করছেন না। প্রচুর বোরো ধান উৎপাদন করেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় ক্ষেত করে লোকসান গুণে লাভ নেই।’ সোনাপুর গ্রামের কৃষক ইউছুপ মিয়া, আলতা মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা অন্যান্য বছরে আউশ ক্ষেত করলেও ধানের দাম না পাওয়ায় এবছর সবগুলো আউশের জমি ফাঁকা রয়েছে।’ একইভাবে গোবিন্দপুর গ্রামের মোশারফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, বিলাল মিয়া, চুনু মিয়া, জালালিয়া গ্রামের ফারুক মিয়া, সালাহউদ্দীন, মতিউর রহমান, আতিকুর রহমান, পতনউষারের ধূপাটিলা গ্রামের আকতার মিয়াসহ অর্ধশতাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় করে ধান উৎপাদনের পর দাম পাওয়া যায় না। মধ্যস্বত্বভোগীরা ঠিকই লাভবান হচ্ছেন। যে কারণে এবছর তারা চাষাবাদ করতে অনাগ্রহ। তারা আরও বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে যাদের খাবার দরকার তারা শুধুমাত্র খাবারের জন্য কিছু কিছু জমি চাষাবাদ করছেন। আগামী আমন মৌসুমেও কৃষকদের মধ্যে এর প্রভাব পড়বে বলে তারা মনে করেন। কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আউশ মৌসুমে উপজেলায় ১৩ হাজার ১৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে ১২ হাজার ২৫০ হেক্টর চাষাবাদ হয়েছে। তবে অন্যান্য বছর এই সময়ে আউশের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রান্ত হলেও এবছর সেটি হচ্ছে না।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান বলেন, এ পর্যন্ত ১২ হাজার ২৫০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে আউশ চাষাবাদ হয়েছে। তবে কৃষকরা জমি ফেলে রাখছেন বা চাষাবাদে অনাগ্রহ এধরণের কোন সংবাদ জানা যায়নি।