প্রিয় মানুষটির অবসাদ দূর করবেন যেভাবে

প্রকাশিত: ২:২১ পূর্বাহ্ণ, মে ৫, ২০২০
ফাইল ছবি

লাইফ স্টাইল ডেস্ক: মুখকে বলা হয় মানুষের মনের আয়না। কিন্তু মুখ দেখেই কি সবসময় সবকিছু বুঝতে পারা যায়? আমাদের চারপাশেই এমন মানুষ আছেন, যারা আমাদের সামনে ঠিকই হাসিখুশি কিন্তু হয়তো ভেতরে ভেতরে তিনি ততটাও খুশি নন। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিজের মিষ্টি মিষ্টি ছবি আপলোড করেন, কিন্তু তাদের সম্পর্কেই বা আমরা কতটা জানি? হয়তো অনেক হাসিখুশি কাপল ছবির আড়ালেও লুকিয়ে থাকে না বলা কোনো কষ্ট।

আজকাল শো অফের যুগ, আর আপনি কষ্টের পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে গেলেও আপনাকে সবার সামনে দেখাতেই হবে যে আপনি ভালো আছেন। তবে অনেকেই এই কাজটি করতে পারেন না। তাদের কষ্ট হলে তারা বলে ফেলেন। আবার অনেকে কষ্ট চাপতে চাপতে অবসাদেরম অন্ধকারে তলিয়ে যান।

বাইরে থেকে দেখে হয়তো আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না যে আপনার সামনে বসে হাসছেন, ভিতরে ভিতরে হয়তো তিনি অবসাদগ্রস্থ। কাজেই, আগে থেকেই কাউকে জাজ করা অথবা খারাপ ব্যবহার করার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই, বরং কৃতিত্ব আছে অবসাদগ্রস্থ মানুষটিকে আবার আলোয় ফেরানোর মধ্যে। কাছের মানুষটি অবসাদে ভুগলে তাকে সাহায্য করুন।

যখন কেউ অবসাদে ভোগেন, তখন তার মনের মধ্যে নানা উথালপাথাল চলতে থাকে। না বলা কথাগুলো জমে জমেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। কাজেই, যদি তিনি আপনার সঙ্গে তার না বলা কথাগুলো ভাগ করতে চান, অথবা তিনি যে অবসাদে রয়েছেন সে বিষয়টি আপনাকে জানাতে চান; তাহলে দয়া করে তার কথা শুনুন।

অনেকেই আছেন যারা অন্য কারও অবসাদেরকথা শুনলে তার নিজের দুঃখের ঝুলি খুলে বসে পড়েন। এতে লাভ কিছুই হয় না; বরং আরও বেশি নেগেটিভিটি ছড়ায়। একবার ভাবুন তো, যদি আপনি কাউকে আপনার একটা সমস্যার কথা বলতে যান এবং তিনি আপনাকে চুপ করিয়ে দিয়ে নিজের হাজার সমস্যার কাহিনী আপনাকে শোনান, আপনার কেমন লাগবে? জমে থাকা কথাগুলো যদি বেরিয়ে আসে, সেক্ষেত্রে মন অনেকটা হালকা লাগে।

অবসাদ সে আবার কী! কাজকর্ম কর, ঠিক হয়ে যাবে। এত বেশি ভাবার কিছু নেই, একটু ব্যায়াম কর, যোগ কর, আপনিই ঠিক হয়ে যাবে- এধরনের কথাগুলো দয়া করে যদি না বলেন, সামনের মানুষটির অনেক উপকার হয়। যেকোনো শারীরিক সমস্যার মতো মানসিক সমস্যারও চিকিৎসা রয়েছে। আর অবসাদগ্রস্থ কেউ যদি কোনো বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে চান তাতে লজ্জার কিছু নেই।

আমাদের জীবনে এখন এত বেশি চাপ যে যেকোনো মুহূর্তে অবসাদ আসতেই পারে। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হবে, চাকরিতে প্রমোশন পেতেই হবে, না খেয়ে ওজন কমাতেই হবে, অন্যের থেকে এগিয়ে যেতেই হবে- সবাই যেন একটা ইঁদুরদৌড়ে দৌড়াচ্ছে। আপনি নিজেও যদি কখনো অবসাদের শিকার হন, তাহলে কাউন্সেলিং করাবেন অথবা প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাহায্য নেবেন।