সুনামগঞ্জে আবারও বন্যা, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশিত: ৪:৩৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২০
সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: ভারতে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার আরও ২৯ সেন্টিমিটার বেড়ে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হতে শুরু করেছে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর ও দোকানপাট।

শনিবার (১১ জুলাই) সকালে সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা শুক্রবার (১০ জুলাই) রাত পর্যন্ত ছিল ২৫ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় ও চেরাপঞ্জিতে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ও যাদুকাটা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৩৩ মিলিমিটার। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ শহর ও হাওরের মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। শহরের উকিলপাড়া, কাজির পয়েন্ট, হোসেন বখত চত্বর এলাকার রাস্তাগুলো দিনের বেলা পানি না থাকলেও রাতের দিকে পানি ঢুকতে থাকে। এ ছাড়াও শহরের উত্তর আরপিন নগর, বড়পাড়া, মল্লিকপুর পশ্চিম তেঘরিয়া, কাজির পয়েন্ট, উকিলপাড়া, হোসেন বখত চত্বর এলাকাসহ বেশি কয়েকটি এলাকায় ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।

এদিকে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এসব উপজেলাও বাড়িঘর ও দোকানপাটে পানি প্রবেশ করেছে।

দ্বিতীয় দফার বন্যার কবলে পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে বন্যা মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত রয়েছেন।

নবীনগর এলাকার নজরুল মিয়া বলেন, ‘আগেও একবার বন্যায় ঘর ছাড়িয়া আশ্রয়কেন্দ্রে উঠলাম, এখন আবার রাত থকি ঘরে হাঁটু পানি। ছেলে মেয়ে বউ নিয়া বড় সমস্যাত আছি। কাজ কাম নাই তার ওপর পানি। ঘরে এখন চুলা জ্বলছে না। আমরা বড় সমস্যাত আছি।’

কাজির পয়েন্ট এলাকার দোকানী জাহিদ তালুকদার বলেন, রাতে দোকান লাগানোর সময়ও দোকানে পানি ওঠেনি। কিন্তু সকালে এসে দেখি দোকানে হাঁটু পানি। এ রকম পানি বৃদ্ধি হতে থাকলে ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সহিবুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাত থেকে আরও ২৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সকালে ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ বলেন, দ্বিতীয়বার বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। ইতোমধ্যে কন্ট্রোল রুম ও আশ্রয়কেন্দ্র খোলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সূত্র: জাগো নিউজ…