কমলগঞ্জের শমশেরনগরে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারকারী ব্যবসায়ীকে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ধাওয়া, পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয়
কমলগঞ্জ সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর বাজারে বিল্লাল হোসেন নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী নিজেকে আওয়ামীলীগের নেতা দাবি করে সব সময় সাধারণ ব্যবসায়ীদের উপর প্রভাব বিস্তার করেন। সাম্প্রতিক সময়ে লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রাখার সময় নিজের কাপড়ের দোকান খুলে ব্যবসা করলেও অন্যান্য সাধারণ ব্যবসায়ীদের নামে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে গোপনে অভিযোগ করতেন বিল্লাল হোসেন।
বুধবার বেলা ২টায় বিক্ষোব্দ সাধারণ ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক পরিচয়দানকারী কাপড়ের ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনকে ধাওয়া করলে আত্মরক্ষার্থে তিনি শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় গ্রহন করেন।
শমশেরনগর বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, বিল্লাল হোসেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান ও শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদের সাথে নিয়মিত চলাফেরা করে নিজেকে আওয়ামীলীগের নেতা দাবি করেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধকালে সরকারের নির্দেশনা ঔষধের দোকান, কাঁচাবাজার ও খাদ্যের দোকান খোলা থাকলেও বিল্লাল হোসেন নিজের কাপড়ের দোকান খুলে নিয়মিত ব্যবসা করেছেন। এসময়ে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে দোকান খুলতে গেলে তিনি পুলিশ কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে সাধারণ ব্যবসায়ীদের নামে অভিযোগ করতেন। এভাবে প্রায় সাধারণ ব্যবসায়ীরা জরিমানা দিয়েছেন। এ নিয়ে কিছুদিন ধরে সাধারণ ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বুধবার বেলা ২টায় প্রথম দফা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদারকি অভিযান পরিচালিত হয়। দ্বিতীয় দফা মৌলভীবাজারের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী হাকিমের অভিযান পরিচালিত হয় শমশেরনগরে। এসব অভিযানেও বিল্লাল হোসেন অন্যান্য কয়েকজন ব্যবসায়ীর নামে গোপনে অভিযোগ করেন। এতে ক্ষেপে সাধারণ ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনকে ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে বিল্লাল হোসেন শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় গ্রহন করে।
বিল্লাল হোসেনও সাধারণ ব্যবসায়ীদের ধাওয়া খেয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনি সাধারণ ব্যবসায়ীদের কোনভাবে হয়রানি করেননি। তবে পুলিশ ফাঁড়িতে থাকা অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ ও শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি নির্বাহী হাকিম ও পুলিশ কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করেই তাকে উদ্ধার করনে।
তবে তার দোকান খোলা রাখায় ভ্রাম্যমান আদালতকে ২ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছেন বলেও জানান।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, আসলেই বিল্লাল হোসেন দুষ্টু প্রকৃতির ব্যবসায়ী। লকডাউনকালে নিজে চালাকির আশ্রয়ে ব্যবসা করলেও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের হয়রানির চেষ্টা করতো। তাই আজ বিক্ষোব্দ ব্যবসায়ীরা তাকে ধাওয়া করেছিল।