কমলগঞ্জ সংবাদদাতা: আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কাপড় আর জুতার বেচা কেনা । ঈদ বাজার। ঈদ বাজারে স্বচ্ছলদের চাহিদা দামী বিপনী বিতানগুলির কাপড়ে আর স্বল্প আয়ীদের চাহিদা গলির দোকানের কাপড়ে।
এ বছর বিপনী বিতানগুলিতে মেয়েদের কারারা ও টিস্যু কাপড়ের জামার চাহিদা বেশী লক্ষ্য করা গেছে। তবে বিগত বছলগুলির মতে এবার নেই ভারতীয় বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালের নাম করণের কাপড়ের চাহিদা। ভারতীয় কাতান, মায়েদের দেশীয় তাঁতের শাড়ির চাহিদা বেশী। দাম বড় নয় পছন্দের কাপড় কিনতে ক্রেতারা ছুটছেন এক বিপনী বিতান থেকে অন্য বিপনী বিতানের দোকান গুলোতে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিপনী বিতানগুলিকে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। রাতে থাকে আলোক সজ্জা। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) কমলগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ শমশেরনগর বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়।
শমশেরনগর বাজারের গড়ে উঠা হামিদ এন্ড কালাম ব্রাদার্স সিটি সেন্টার, আরপি টাওয়ার,এ আর কমপ্লেক্স,রয়েল প্লাজা, হোসেন প্লাজা,রহিম ম্যানশন, সালাম মার্কেট,আলী মার্কেট, সুবল ট্রেড সেন্টার, মদিনা মার্কেট, কে এম রহমান মার্কেট, সাদেক ভবন, সোনিয়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোল, ফরিদা ফ্যাশন,রহমান প্লাজাসহ সবগুলো কাপড়ের দোকানে গত কয়েক দিন ধরে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পাশাপাশি কমলগঞ্জ পৌরসভার ভানুগাছ বাজারে আল আমিন মার্কেট, আপ্তাব ম্যানশনের ক্রেতাদের ভিড়।
এসব মার্কেটে মেয়েদের চাহিদামত জামার দাম সর্ব নিম্ন ২ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। মায়েদের শাড়ি ১হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। মায়েদের চাহিদা দেশী তাঁতের শাড়ির। এর দাম সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে ১হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
মাঝারি মেয়েদের চাহিদা নানান কারু কাজ করা জামার। এগুলোর দাম হচ্ছে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছেলেদের সাদা পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে ছাপা নানা ধরনের পাঞ্জাবির প্রতি আকর্ষণ বেশী। এসব পাঞ্জাবি ১ হাজার টাকা থেকে ১৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। শিশু থেকে তরুন বয়সীদের পছন্দ জিন্সের প্যান্ট, শার্ট টি শার্ট ইত্যাদির। এসব বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। জেন্ট কালেকশনের বিভিন্ন নামের আলাদা দোকানগুলিতে শুধু মাত্র ছেলেদের পছন্দের শার্ট, টি শার্ট, জিন্স প্যান্ট,পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে। হামিদ এন্ড কালাম ব্রাদার্স সিটি সেন্টার-এ কথা হয় ক্রেতা রাবেয়া বেগমের সাথে। তিনি জানান মেয়ের পছন্দে ১২০০ টাকা দিয়ে একটি জামা কিনেছেন। কাপড়ের দাম মোটামোটি সহনীয় পর্যায়ে বলেও তিনি জানান।
অন্যদিকে স্বল্পআয়ী মানুষজন, গ্রামের কৃষক পরিবার বাজারের গলির কাপড়ের দোকানে গিয়ে সাধ্যের মধ্যে পছন্দের কাপড় কিনছেন। গলির দোকানের ক্রেতা জসিম উদ্দীন বলেন, যে আয় করেন তা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে চলতে হয়। তাই কম দামে গলির দোকান থেকে কাপড় কিনে ছেলে মেয়েদের দিচ্ছেন। রয়েল প্লাজার কাপড়ের মার্কেটে কথা হয় ক্রেতা সাজিনা আক্তারের সাথে। তিনি জানান বছরে ঈদের সময় প্রথমে ছেলে মেয়েদের পছন্দের জামা কাপড় কিনে দিতে হয়। তার পর নিজের পছেন্দের কাপড় কিনতে হয়। দাম বড় নয় আসলে পছন্দটা বড়।
শমশেরনগর রহিম ম্যানশনের শুভেচ্ছা ক্লথ স্টোরের মালিক প্রেমানন্দ দেবনাথ, এ কমপ্লেক্সের রঙ্গন ফ্যাশেনের মালিক শাহজাহান মানিক বলেন, এ স্থানটি কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের দৈনন্দিন কেনা কাটার বাজার। এখানে প্রচুর পরিমাণে ক্রেতা রয়েছেন। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে দেখা যায় দাম নিয়ে তেমন সমস্যা নেই। বিক্রেতারাও বিক্রয়ে সন্তোষ্ট। গভীর রাত পর্যন্ত চলে বেচা কেনা
পাশাপাশি জুতার দোকানের পছন্দের জুতা ক্রয় বিক্রয়ে ব্যস্ত ক্রেতা ও দোকানীরা। তবে কমলগঞ্জ উপজেলার সবচেয়ে বড় জুতার দোকান শমশেরনগরের শরিফ সু স্টোর ও ডলি সু স্টোরে ক্রেতাদের ভিড় বেশী। নানান কোম্পানীর জুতার মাঝে বাটা, এ্যাপেক্সের কালেকশনের জুতার চাহিদা বেশী।