ডেস্ক রিপোর্ট: সিলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের নামফলক উন্মোচন করেছেন তিন মন্ত্রী। শনিবার দুপুরে জেলার কোম্পানীগঞ্জে নির্মাণাধীন পার্কটি পরিদর্শন শেষে নামফলক উন্মোচন করেন তারা।
উন্মোচনের সময় ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলক।
এর আগে ওই পার্কের নাম ছিল হাই-টেক পার্ক সিলেট। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক করা হয়। এদিকে একই সময় পার্কের ভেতরে নির্মাণাধীন শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন মন্ত্রীরা।
এর আগে এ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে মন্ত্রীদের কাছে তথ্য উপস্থাপন করেন হাইটেক পার্ক প্রকল্পের পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি। এরপর সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে হাইটেক পার্কের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রকল্প নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন তিন মন্ত্রী।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, দেশি বিদেশি বিনিয়োগের জন্য দেশে এখন উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। এই হাই-টেক পার্কে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিসহ বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। যা এ অঞ্চলের অর্থনীতির আমূল পরিবর্তনে অসামান্য অবদান রাখবে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, সরকারের ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ অনুযায়ী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেক্টর হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। তথ্য প্রযুক্তি মানুষের সৃজনশীলতা ও কর্মক্ষমতা সৃষ্টিতে বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আশা করি। তাছাড়া প্রকল্প সিলেট শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার, এয়ারপোর্ট থেকে ২০ কিলোমিটার ও নতুন রেলস্টেশন থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে থাকায় বিনিয়োগের জন্য খুবই উপযোগী হবে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলক বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট মেডিকেল কলেজ ও সিলেট এমসি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাখের অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। মূলত তাদের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অঞ্চলে একটি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি সিলেট হাই-টেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে সিলেটবাসীর স্বপ্ন পূরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সিলেটকে একটি প্রযুক্তি নগরী হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন তিনি।
হাই-টেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বলেন, ১৬২.৮৩ একরের বেশি জায়গা নিয়ে এ পার্ক গড়ে তুলেছি। অচিরেই আরো ৬৪০ একর জমি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আইটি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং তাদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ও আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেটর সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এ পার্কের ভেতরে আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেটর সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের ডিসি এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান, সাবেক এমপি জেবুন্নেছা হক, জেলা আওয়ামী লীগের দফতর বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও বিজেন ব্যানার্জি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম আহমদ প্রমুখ।
২৯০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্পটির ভূমি উন্নয়নের প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া প্রশাসনিক ভবনের কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ রাস্তার কাজ ৫০ শতাংশ ও ব্রিজ নির্মাণের কাজও প্রায় ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ভবনটির ফ্লোরের মোট আয়তন রয়েছে ৩১০৭৭ বর্গফুট। তাছাড়া পানি সরবরাহের জন্য গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজও শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
অন্যদিকে পার্কের ভেতরে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ১০০ জনকে আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আরো ৩০০ জনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান আছে।