নজরুল ইসলামঃ আমার বাবার সহকর্মী সালিশ বিচারক বন্ধুবান্ধব শিক্ষকরা সময়ক্ষণে প্রায়ই জড়ো হতেন আমাদের বাড়িতে। চা-নাস্তা করতেন আর অত্যন্ত স্বাধীনভাবে সমাজের অসঙ্গতি নিয়ে আলাপ আলোচনা করতেন– হাসতেন মন খুলে। আমার মনে কৌতূহল সৃষ্টি হলো কি কারণে এই সকল তীক্ষ্ণবুদ্ধি সম্পন্ন সম্মানিত ব্যক্তিরা হাসছেন? একটু আড়ি পেতে যা শুনলাম, উপলব্ধি করলাম তা হল তাদের দ্বারা মিমাংসিত অমিমাংসিত সালিশ বিচারের রায় বাদী বিবাদী পক্ষের চিন্তা চেতনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রায়ের পরে বিবাদী পক্ষের অভিমত নিয়ে এক একজন এক একজনের অভিজ্ঞতা স্মৃতিচারণ করছেন আর হাসছেন। যদিও বিচার কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে এইভাবে জমানো হাসি প্রকাশ করা কঠিন।
কমলগঞ্জের পতন উযার ইউনিয়নের প্রয়াত শ্রদ্ধেয় ওমর আলী সাহেব, গোলাম আছকর চৌধুরী, আব্দুল মছব্বির মাস্টার, জহির উদ্দিন চৌধুরী চেয়ারম্যান, আব্দুল আহাদ চৌধুরী চেয়ারম্যান এবং তাদের মধ্য থেকে জীবিত আমার পিতা অব: শিক্ষক আব্দুন নূর মাস্টার। উল্লেখিত মহান ব্যক্তিরা নিজ গুনে জ্ঞানবুদ্ধিতে সমাজকর্ম রাজনীতি ও স্ব-স্ব ক্ষেত্রে আলোকিত সমালোচিত এবং সর্বজন প্রসংশিত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।
আমার চোখে দেখা তাদের গ্রাম্য সালিশ বিচারিক জ্ঞান, বিচার কার্য সম্পাদন, সমাজ সংস্কার, দৃষ্টিভঙ্গি, তীক্ষ্ণবুদ্ধি, জনপ্রিয়তা, সমস্যা সমাধানে কৌশল ও তাদের নেতৃত্ব আমাকে প্রায়ই ভাবায় তাদের শুন্যস্থান কি কখনো পূরণ হবে? তাদেরকে ছাড়িয়ে আরো ভালো কিছু করার প্রত্যয়ে কেউ কি কাজ করছেন যা আমাদের চোখে পড়ছে? যে বিষয়টা নিয়ে আজকে আলোচনা সমালোচনা করতে চাই তা হল সালিশ বিচার।
সমাজে এখনো অনেক ভালো সালিশ বিচারক আছেন যারা সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রত্যেক এলাকায় একই ধরণের দেশপ্রেমিক সালিশ বিচারক বড় মনের মানুষ ছিলেন এখনো আছেন যারা নিঃস্বার্থ ভাবে স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। যাদের কল্যাণেই আমাদের সামাজিক সম্প্রীতি বন্দন আজও অটুট।
আজকাল মানুষের কাজের স্বীকৃতি দিতে গিয়ে আমরা বড়ই সমস্যায় পড়ি। আমরা কেউ কাউকে স্বীকৃতি দিতে চাই না, কারণ কি? সমস্যা হচ্ছে মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, ইহা একটি কথার কথা তবে যুক্তি আছে, মৌলভি সাহেবদের প্রতি আমার অনেক সম্মান আছে। আমাদের জ্ঞানের পরিধি যেমন কাজও তেমন। আমরা একটা গন্ডির মধ্যে বিশিষ্ট বুদ্বিজীবী সমাজসেবক মাতব্বর বা রাজনৈতিক নেতা। দেশের অভ্যন্তরে এক শহর থেকে অন্য শহর ভ্রমণ করতে গিয়ে আমাদের ভাষা ট্রান্সলেটরের প্রয়োজন হয়, দেশের বাহিরে হলে তো আল্লাহ -ই মালুম। আমাদের জ্ঞানের পরিধির সাথে আমরা প্রায়ই ধাক্কা খাচ্ছি। কারন আমাদের ন্যূনতম উপলব্ধি নেই যে, কাজের স্বীকৃতি মানুষকে উৎসাহ যোগায়, নতুন কিছু করার প্রেরণা যোগায়, সমাজে একে অন্যের প্রতি ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয়, দুঃখজনক হলেও সত্য এই সহজ বিষয়টি বোধগম্য হওয়ার জন্য আমাদের সেই নিন্মতম জ্ঞানও মাইল দূরে।
সালিশ বিচার প্রসঙ্গ আসলে আমার শ্রদ্ধেয় পিতা আব্দুন নুর মাস্টারকে বিভিন্ন বিশেষণে বিশেষিত করা হয়। আমি সে দিকে যাচ্ছি না, আমি যা বলতে চাই তিনি একজন ভালো বাবা, একজন আদর্শ শিক্ষক শিক্ষানুরাগী ছিলেন শিক্ষক সমাজের নেতা। আমাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে উনার চেষ্টা অবর্ণনীয়। সালিশ বিচার নিয়ে আমার বাবার মুখে শোনা ঘঠে যাওয়া বাস্তব একটি রম্য ঘঠনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই যা মনে পড়লে প্রায়ই আমি একাই হাসি। আপনাদের হাসাতে পারবো কিনা জানিনা। আজকাল তো কেন জানি মানুষ হাসতে চায় না।
যাই হোক , উনার দ্বারা মিমাংসিত একটি ছোট সালিশ বিচারের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন- আমি একটি পারিবারিক সালিশ বিচারে দুই পক্ষের কথা শুনে তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের উদাহরণ উপমা দিয়ে যখন দেখলাম তাদের মধ্যে রাগ-বিরাগের একটু ভাটা পড়েছে সেই সুযোগে রায় দিয়ে দিব সিদ্ধান্ত নেই, এবং রায় প্রদান করি। রায়টি ছিল এই রকম যে, দোষী পক্ষকে বললাম আপনি যে কু -কর্ম করেছেন তার জন্য সর্ব প্রথম আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেইজন্য আপনাকে আমাদের সামনে ১০টি জুতার বাড়ি নিজ হাতে নিতে হবে আর নগদ ১০,০০০/- টাকা জরিমানা এই দুই দণ্ডে আপনি দণ্ডিত। আমার এই বিচার আপনি মানতেও পারেন আবার নাও মানতে পারেন।
বাদী পক্ষ (দণ্ড প্রাপ্ত পক্ষ) বলল মাস্টার সাহেব আপনার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি আমি আপনার বিচার রায় মানি এবং মেনেও নিয়েছি ,কিন্তু আমার একটি কথা আছে! আমি বললাম আর কথা না বলাই ভালো। সে বলল একটি কথা মাস্টার সাব, আমি অনুমতি দিয়ে বললাম বলেন শুনি, সে বলল মাস্টার সাব জুতার বাড়ির পরিমাণটা বাড়িয়ে জরিমানার টাকার পরিমাণটা কি একটু কমানো যায় না? তাই বলছি সালিশ বিচার করতে গিয়ে অনেক সময় বিচারকদের বিভিন্ন ধরণের কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। রাগের মাথায় মানুষ অপরাধ করে তার মানে এই নয় যে তারা একেবারে জ্ঞানহীন। সময়ের সাথে পাল্টাচ্ছে বিচারের ধরণ মানুষের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে সচেতনতা।
পাঠক, সালিশ-বিচার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা করার মত তীক্ষ্ণ বুদ্ধি আমার নেই। আমার মত সহজ সরল মানুষের জন্য ইহা একটি কঠিন কাজ। আপনারা ইতিমধ্যে ভাবছেন এই ভদ্রলোক বসবাস করে সুদূর লন্ডনে বাংলাদেশ থেকে ৫০০০ হাজার মাইল দূরে সালিশ বিচার নিয়ে কি জ্ঞান রাখেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সালিশ বিচার শব্দটির সাথে সেই ছোট বয়স থেকেই পরিচিত। তাই হটাৎ ভাবলাম ঐ বিষয়টা নিয়ে একটু আলোচনা করি। তবে গ্রামের মোড়ল হওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।
গ্রাম্য সালিশ-বিচার হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ে দেওয়ানি বা ফৌজদারি উভয় ধরনের ছোট-খাট বিবাদ দাঙ্গা হাঙ্গামা ফয়সালার অনানুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থা। এ বিচার কার্য সমাধান করেন স্থানীয় মাতব্বর চেয়ারম্যান ও তাদের সমন্বয়ে স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে গঠিত বিচারক সভা। সালিশ মূলত পাড়া ও গ্রাম ভিত্তিক স্থানীয় লোক সমাজের বিচার-ব্যবস্থা কার্যক্রম। প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলে প্রধানত যে দু’ধরনের বিচার-ব্যবস্থা প্রচলিত তার একটি হলো সালিশ অপরটি হলো সুনির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় শাখার কার্যক্রম।
আমাদের দেশে গ্রাম্য সমাজ জীবনে সালিশ-বিচার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সালিশ ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত। গ্রাম্য সালিশি বিচার ব্যবস্থা আমাদের পূর্ব পুরুষের আমলেও ছিল আজও তা বহাল আছে, তবে এর আধুনিকায়ন হয়েছে বিভিন্নভাবে। আগেকার গ্রাম্য সালিশি বিচার সাধারণত সাদা দাঁড়ি ওয়ালা বয়স্ক মুরব্বীয়ানরা করতেন যাদের ছেলে-মেয়ে নাতি-নাতনী আছে। তারা অনেকেই লাঠি ভর করেই বিচারের আসরে আসতেন। বিচারের আসরে তাদের জন্য রাখা হত বিভিন্ন ধরনের হুক্কা, যেমন খাসি হুক্কা, সিগারেট, বিড়ি প্রভৃতি। সালিশ বিচারকরা আনন্দের সঙ্গে হুক্কায় গুড়ুম গুড়ুম টান দিতেন আর বিচার কার্য পরিচালনা করতেন। কথা বলতেন অনেক ভেবে চিন্তে তায় তমিজের সাথে যুক্তি সম্বলিত।
আজ কালকের চিত্র একটু ভিন্ন। নাতির বয়সি নবীনরা সালিশ-বিচার করছেন। অনেকেই নামের পূর্বে বিশিষ্ট সালিশ বিচারক লিখেন। তাদের এই সব উদ্ভট আচরণ নিয়ে অনেক প্রশ্ন! হাতে স্মার্টফোন মুখে পান ডান হাতের ওয়ার্নিং ফিঙ্গারের ডগায় চুন আর সিগারেট তো আছেই। ফোন কল রিসিভ করে বলছেন আমি একটা জটিল সালিশে আছি আপনার সালিশের ডেট বদলান এই হচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতি।
আমাদের দেশ একটি গ্রাম প্রধান দেশ। এখানে অধিকাংশ লোক গ্রামে বসবাস করে। তাদের সরল সাদামাটা জীবনযাপনে নানাবিধ সমস্যা দেখা যায়। সেই সমস্যা সমাধানে গ্রাম্য সালিশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা। কিন্তু অতি দুঃখজনক হলেও সত্য গ্রাম সালিশ ব্যবস্থা এখন অর্থহীন যা সহজ সরল সাধারণ মানুষকে শোষণের অন্যতম হাতিয়ার। আজকাল ৮০% সালিশ বিচার ন্যায়সঙ্গত হয় না। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ কাজ করে।
আমরা সাধারণত ঘুষ দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা লুটপাট স্বজনপ্রীতির জন্য দায়ী করি সরকারি কর্মচারি কর্মকর্তা কেরানী থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন সচিব পর্যায়ের কর্তা মেম্বার চেয়ারম্যান রাজনৈতিক নেতা এমপি মন্ত্রী ব্যক্তিদের। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের এক কালের মহৎ গুণাবলীর অধিকারী সেই ন্যায়ের প্রতীক সালিশ-বিচারক গ্রাম্য মাতব্বররা আজকাল বিড়ি, সিগারেট, লাল চা, দুধ চা, থেকে শুরু করে নগদ অর্থ সালিশ-বিচার ফিস হিসেবে গ্রহণ করে উল্টা-পাল্টা বিচার করছেন। ন্যায়কে অন্যায় আর অন্যায়কে ন্যায়ে পরিণত করাই তাদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে যা সমাজে সৃষ্টি করছে অস্থিরতা।
সমস্যা সমাধানের চেয়ে সমস্যাকে জিইয়ে রেখেই দুইপক্ষের কাছ থেকে স্বার্থ সিদ্ধি হাসিল করতে তারা ব্যস্ত। গ্রাম্য সালিশ বিচারে নীতি নৈতিকতায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়ার কারণেই আজ আমাদের সমাজ জীবনে হিংসা বিদ্বেষ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে যা কখনো কখনো বংশ পরস্পর প্রভাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের প্রত্যক্ষ পরোক্ষ প্রতিবন্ধকতা গ্রাম্য সালিশ-বিচার ব্যবস্থাকে করেছে প্রশ্নের সম্মুখীন। যেমন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ন্যায়ের পক্ষে লোক না থাকা, ধরি মাছ না ছুঁই পানি অবস্থান, একদিনের সালিশ বারবার বসা, বংশপ্রীতি বা এলাকাপ্রীতি, স্বজনপ্রীতি, সালিশ বসার পূর্বে দুই পক্ষ থেকে টাকা জমা নেয়া, মিথ্যা সাক্ষী, চূড়ান্ত মিমাংসা না করা, কুচক্রী লোকের কু-পরামর্শ, আইন সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা এবং দেশে যে সরকার থাকুক না কেন সেই সরকারের প্রতিনিধির ক্ষমতার দাপটে প্রতিপক্ষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়া।
একটি সাধারণ বিষয় নিয়ে সংগঠিত সালিশ-বিচারে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং জামাতি ইসলামীর বিচারকদের উপস্থিতি আবির্ভাব লক্ষণীয়। যা সমস্যা সমাধানের চেয়ে সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। আজকের দুনিয়ায় বেশিরভাগ সালিশ বিচারক বা মুরব্বিদের মধ্যে দূরভিক্ষণ যন্ত্র দিয়ে সততা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
গ্রাম্য সালিশী বিচার ব্যবস্থায় আপোষ নিস্পত্তিতে যে কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারলে উভয় পক্ষেরই কল্যাণ হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আদালতে গিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করেও কোনো সুরাহা হয় না বরং ঘাটে ঘাটে সেলামি দিতে দিতে দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনৈতিক ভাবে। তবে ইহা ঠিক এখনো কিছু সৎ খোদা ভীরু এবং যোগ্য বিচারকদের কারণে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে উভয় পক্ষই বিচার পেয়ে ঘরে ফিরেন।
আমাদের গ্রামীণ সামাজিক পারিবারিক সমস্যা যতটা ভয়ানক তারচেয়ে বেশি ভয়ানক আমাদের মন মেজাজে অহংকার ও অস্তিত্বের লড়াই লোভ-লালসা ইত্যাদিতে। তাই বলতে চাচ্ছি আগে আমাদের মনটাকে পরিস্কার করা দরকার ,সমস্যার সমাধান হবেই। বিচার মানি কিন্তু তাল গাছ আমার এই যে আমাদের ইগু স্বভাব তা থেকে উত্তরণ ঘটানো দরকার। যতক্ষণ না আপনার মনটা ঠিক হচ্ছে হাইকোর্টের রায় নিয়েও আপনার সমস্যার সমাধান হবেনা। আপনার সমস্যা সমাধানের লক্ষে নিজেই চিহ্নিত করুন সমস্যাটা কি। আপনি যে সমস্যায় পড়েছেন তার একটা পরিস্কার ধারণা সৃষ্টি করুন নিজের মধ্যে। আপনার সমস্যার সাথে সম্পর্কিত অন্যদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আপনাকে বুঝতে হবে আন্তরিকতার সহিত। সমস্যা সমাধানের লক্ষে সম্ভাব্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। সম্ভাব্য পরিকল্পনা গুলো বিচার বিশ্লেষণ করেন নিজ থেকে ও এর থেকে কি ভাবে উত্তরণ সম্ভব তা নিয়ে স্টাডি করুন। সমস্যা সমাধানে সব সময় পজেটিভ চিন্তা করুন- আত্ববিশ্বাসী হয়ে বলুন এটা কোনো সমস্যাই নয়।
আমাদের নিত্যদিনের সামাজিক সমস্যা গুলো ঠাণ্ডা মাথায় নিজ বিচারগুণে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা সর্বোত্তম পন্থা। নিজের সমস্যা অন্যকে দিয়ে সমাধানের মানে হচ্ছে নিজ উদ্যোগে আপনি আপনার সমস্যা দ্বিগুণ বড় করছেন।
আলোচনার পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে। অনেক কিছুই অগোছালো অনানুষ্ঠানিক ভাবে আলোচনা সমালোচনা করে ফেলেছি। সালিশ বিচারক মাতব্বরদের মত বুদ্ধি করে ঘুরায়ে পেচায়ে আলোচনা করতে পারিনি বলে দুঃখিত। সমস্যা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করতে করতে ক্লান্ত না হয়ে সমস্যা থেকে কিভাবে উত্তরণ ঘটানা যায় তা নিয়ে নতুন চিন্তা ভাবনা হতে পারে সমাজ উন্নয়নে আমাদের দিক নির্দেশনা।
আশার কথা হল দুর্নীতির এ মহাপ্লাবনে হাতেগোনা কিছু লোক এখনও সততা ন্যায়নিস্টা বজায় রেখে চলছেন নিতান্ত। আগের মতো এখনো সৎ সালিশ-বিচারক সংখ্যক স্বল্প হলেও আছেন যারা হক কথা বলেই যাচ্ছেন। তবে ভেজালের ভিড়ে তারা নিতান্ত কোণঠাসা বলেই মনে হয়।
লেখকঃ নজরুল ইসলাম
ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট,
ওয়ার্কিং ফর ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস NHS লন্ডন ,
মেম্বার, দি ন্যাশনাল অটিষ্টিক সোসাইটি ইউনাটেড কিংডম, আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা